কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বারাসতের অতিরিক্ত পুলিস সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, এলাকায় অশান্তি পাকানো ও পুলিসের উপর হামলার ঘটনায় শাবির আলি, হাসেম আলি ও জহর আলিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। আমাদের একটি গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি কয়েকজন পুলিস কর্মী অল্প বিস্তর জখম হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসত ২ ব্লকের শাসন গ্রাম পঞ্চায়েতের খামার নওবাদ গ্রামে প্রায় ৬৩০বিঘার ভেড়ি রয়েছে। এই ভেড়ির সিংহভাগ খাস জমি। এই ভেড়ি থেকে খামার নওবাদ গ্রামের মানুষ ছাড়াও দুবদিয়া গ্রামের একাংশ ও শাসন গ্রামের বাদা পাড়ার বাসিন্দারা বছরের শেষে লিজের টাকা পান। মাছ চাষের জন্য ভেড়ি লিজে নেওয়া মালিকের কাছ থেকে খামার নওবাদ গ্রামের গ্রাম কমিটি টাকা নিয়ে তা গ্রামবাসীদের মধ্যে বিলি করে। ২০১১ সালে এই গ্রাম কমিটির সভাপতি ছিলেন তৃণমূল নেতা সফিকুল ইসলাম। ২০১৩ সাল নাগাদ তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী মসিয়ার রহমানকে গ্রাম কমিটির সভাপতি করা হয়। এরপর থেকে ভেড়ির বিঘা পিছু দু’হাজার টাকা ‘উন্নয়ন ফিজ’ কেটে নেওয়ার পাশাপাশি খাসের জমির অর্ধেক টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে মসিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে। ভেড়ি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় শুধু নয়, কয়েক বছর আগে এই ভেড়ির প্রায় ৩০বিঘা জমি মাটি ফেলে ভরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে এলাকাবাসী ফের সফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জোটবদ্ধ হতে শুরু করে। জুলাই মাসে এলাকাবাসী কালীঘাটে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে অভিযোগ জানান। এরপর থেকে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাতে যাওয়ার অপরাধে গ্রাম কমিটি থেকে বিদ্রোহী বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। এই নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় মসিয়ার রহমানের সমর্থকদের সঙ্গে বচসার পাশাপাশি একজনকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে সফিকুল অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এরপর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মসিয়ার রহমানের অনুগামীর সশস্ত্র অবস্থায় গ্রামে হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিসের সামনে ১৫টির বেশি বোমা ফাটানো হয়। পাশাপাশি শূন্যে দেদার গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। এমনকী পুলিসের একটি গাড়ি রড দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিসকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। ওই সময় পুলিস কর্মীরা পালিয়ে বাঁচেন। পাল্টা হিসেবে সফিকুল ইসলামের অনুগামীরাও বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। বড় পুলিস বাহিনী এসে কোনওমতে দুষ্কৃতীদের হটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এই বিষয়ে সফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করে ভেড়ি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা লুট চলছে। এমনকী ভেড়ির বিঘার পর বিঘা ভরিয়ে জমি বিক্রি করছে মাফিয়ারা। এলাকাবাসী এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই হামলা শুরু হয়েছে। মসিয়ার রহমানের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে। অথচ আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। মসিয়ার রহমান বলেন, আগে এই ভেড়ি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা লুট, মাটি পাচার করেছিল সফিকুল ইসলাম। তাই দল ওকে সরিয়ে দিয়েছে। ইদানিং উনি বিজেপি ও সিপিএমের গুণ্ডাবাহিনীকে নিয়ে শনিবার রাতে আমাদের এক কর্মীকে মারধর করেছেন। হামলা করেন। আমাদের কর্মীরা পাল্টা প্রতিরোধ করেছে। ওরাই এলাকায় বোমাবাজি ও পুলিসের গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, শনিবার থেকে আমি ওই ঘটনার উপর নজর রেখেছি। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয় নেই। বিরোধীরা অশান্তি পাকিয়ে শান্ত শাসনকে অশান্ত করতে চাইছে।