গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম শম্পা চক্রবর্তী (৪৭)। ধৃতদের নাম রাজু ওরফে জয় সামুই এবং স্নেহা চক্রবর্তী। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা বলেন, তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। একাধিক জায়গায় রক্তের দাগ মিলেছে। সেগুলি উদ্ধার করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
পড়শিরা বলেন, চারতলা বহুতলের ছাদের উপরে ঘর তৈরি করে বছর পাঁচেক ধরে থাকছিলেন ভূপাল চক্রবর্তী, তাঁর স্ত্রী শম্পা এবং তাঁদের একমাত্র মেয়ে স্নেহা। ভূপালবাবু নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। সপ্তম শ্রেণীর গণ্ডি না পেরনো স্নেহা গত নভেম্বর মাসে পেশায় মুদি ব্যবসায়ী জয়ের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করে। তবে তার আগে থেকেই জয়ের ওই পাড়ায় আসা-যাওয়া ছিল। যা নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে স্নেহা অতীতে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিল। বিয়ের পর মেয়ে-জামাই এই বাড়িতে এসেই পড়ে থাকত। অনেক সময় গভীর রাতে নেশা করেও ফিরত জামাই। টাকা-পয়সা চেয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির উপরে চাপ দিত। সেই নিয়ে পারিবারিক অশান্তি চলতই।
পুলিস প্রাথমিক তদন্ত করে জেনেছে, নিত্যদিনের এই ঝামেলা থেকে নিস্তার পেতে জয় স্নেহাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, কে তার কাছের? সে না তার বাবা-মা? স্নেহা জয়ের পক্ষেই মত দেয়। এরপর শনিবার গভীর রাতে ওই দু’জন বাড়িতে এসে আবার শম্পাদেবীর সঙ্গে অশান্তি শুরু করে। তখন ভূপালবাবু কর্মস্থলে চলে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, অশান্তির সময়ে ওই দু’জন শম্পাদেবীর মুখ প্লাস্টিক দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধ করে এবং সব্জি কাটার ছুরি দিয়ে গলা কেটে দেয়। এরপর ভোরে প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহটিকে চাদরে মুড়ে ট্রলিতে ভরে নীচে নামিয়ে আনে তারা।
উল্টোদিকের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা সুনীপা মুখোপাধ্যায় বলেন, রাত ২টো নাগাদ আমার স্বামী বাড়ি ফেরেন। বলেন, নীচে রাস্তায় একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে। আমি ব্যালকনিতে গিয়ে দেখি দিয়া (স্নেহার ডাক নাম) এবং ওর স্বামী দাঁড়িয়ে। এরপর দেখি, স্নেহার স্বামী একটি সাইকেলে কোনও ভারী কিছু চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সাইকেল থেকে ভারী জিনিসটা পড়ে গেলে পাশে একটি বন্ধ গ্যারাজের শাটার খোলার চেষ্টা করে সে। পুরো ঘটনাটাই মোবাইলের ক্যামেরায় তুলছিলাম আমি। হঠাৎই আমার ক্যামেরার ফ্ল্যাশ দেখে সাইকেল নিয়ে চলে যায় তারা।
এলাকারই বাসিন্দা অভিষেক গুহ বলেন, সকাল ছ’টা নাগাদ পাড়ার বাসিন্দা সুরঞ্জন কর নিজের বাড়ির সামনে চাদরে মোড়া দেহ ও ট্রলি দেখে আমাকে ডাকেন। আমি বিষয়টি দেখে থানায় খবর দিই।
পর্ণশ্রীর বাড়ি ও সেই ট্রলিব্যাগ।- নিজস্ব চিত্র