পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বরূপনগরের বাঁকড়া গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাবিলপুর গ্রামের বাসিন্দা নিত্যরঞ্জন ঘোষ। তাঁর স্ত্রীর নাম আলপনা ঘোষ। চাষবাসের পাশাপাশি এলাকায় তারা সুদের কারবার করত বলে অভিযোগ। ইদানীং আলপনাদেবী ঝাড়ফুঁক ও গুনিনের কাজ শুরু করেন বলে অভিযোগ। এক মাস আগে প্রতিবেশী ইন্দ্রজিৎ ঘোষের ২ বছরের মেয়ে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পায়খানা ও বমি করতে থাকায় তাকে প্রথমে বসিরহাট জেলা হাসপাতাল ও পরে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই সময় চিকিৎসকরা জানান, বিষাক্ত কিছু খাওয়ার ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ওই সময় থেকেই আলপনাদেবীর উপর সন্দেহ বাড়ে এলাকাবাসীর।
গত শনিবার আলপনা প্রতিবেশী এক নাবালিকাকে সুন্দরী ও স্বাস্থ্যবান করিয়ে দেওয়ার কথা বলে জোর করে একটি ওষুধ খাওয়ায় বলে অভিযোগ। সে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী। এরপর থেকে তারও পায়খানা ও বমি হতে শুরু করে। সোমবার তাকে বসিরহাট জেলা হাসপাতাল ও পরে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে রিঙ্কুর অবস্থা সঙ্কটজনক। গত মঙ্গলবার মেয়েটির বাবা থানায় আলপনার নামে অভিযোগ করেন। এই ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর গ্রামবাসীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার সকালে স্বরূপনগর থানার পুলিস ঘটনার তদন্তে গ্রামে ঢুকতেই কাবিলপুর ছাড়াও পশ্চিম জয়নগর, আতুরিয়া, পোলতা, গোকুলপুর সহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা ভিড় জমান। পরিবারের তরফে আলপনা বাড়িতে নেই জানানোর পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকাবাসী। ঘরে থাকা তার স্বামী, ছেলে ও বউমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায় উন্মত্ত জনতা। এরপর পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বাড়িতে ভাঙচুর করে জানালা ও দরজায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ির পাশে থাকা ধানের গোলা, খড়ের পালুই ও একটি পিক আপ ভ্যানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বড় পুলিস বাহিনী ও র্যা ফ গিয়ে ঘরে আটক নিত্যরঞ্জনবাবু ও তাঁর ছেলে ও বউমাকে বের করার চেষ্টা করলে ফের উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিসকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। পুলিস লাঠিচার্জ করে এলাকাবাসীকে সরিয়ে আটকদের উদ্ধার করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
অসুস্থ ছাত্রীর বাবা বলেন, প্রতিবেশী কাকিমা আলপনা ঘোষ আমার মেয়েকে জোর করে স্বাস্থ্যবান হওয়ার ওষুধ খাইয়েছিল। ওই ওষুধ খেয়ে মেয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। মেয়ে বলেছে, ওদের শাস্তি দিতে হবে। ওরাই গুনিনগিরি করে আমার মেয়েকে খুন করতে চেয়েছে। এর আগেও এলাকার একটি বাচ্চা মেয়েকে ওরা মেরেছে। ওদের ফাঁসি চাই। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য নান্টু সরকার বলেন, গুনিনগিরি করে এলাকার বাচ্চা মেয়ে ও এক ছাত্রীকে খুনের অভিযোগ এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এই গুজবের জেরে আশাপাশের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এসে ওই মহিলার বাড়িতে ভাঙচুর চালায় ও বিভিন্ন সামগ্রীতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।