বিএনএ, বারাসত: বন্ধুর স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক যুবকের বিরুদ্ধে। তাতে আপত্তি জানান তরুণী। তাই ফেসবুকে বন্ধু ও বন্ধুর স্ত্রীয়ের ঘনিষ্ঠ ছবি পোস্ট করে দেয় যুবক। যার জেরে লজ্জায়-অপমানে আত্মহত্যা করতে যান হিঙ্গলগঞ্জের এক গ্রামের গৃহবধূ। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদিকে তাঁর স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, তরুণীর স্বামী হিঙ্গলগঞ্জের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে মুম্বইতে থাকেন। কাজের সূত্রে মুম্বইতে আলাপ হয় হাসনাবাদের বরুণহাট গ্রামের রাহুল সর্দারের সঙ্গে। তাঁদের বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েক মাস আগে রাহুল মুম্বই থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি আসবে জানায়। রাহুলের হাতে নিজের খারাপ মোবাইলটি দেন তরুণীর স্বামী। স্ত্রীকে জানিয়ে দেন, মুম্বই থেকে তাঁর এক বন্ধু মোবাইলটি নিয়ে যাচ্ছে। সেই মোবাইলটি হিঙ্গলগঞ্জে ওই গৃহবধূর হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাড়ি ফেরার পথে মোবাইলটি ঘাঁটতে ঘাঁটতে মত বদলায় রাহুল। কায়দা করে মোবাইলের গ্যালারি খুলে ফেলে। তাতে বন্ধু ও বন্ধুর স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ অবস্থায় কিছু ভিডিয়ো ও ছবি হাতে আসে তার। গ্রামে ফিরেই বন্ধুর স্ত্রীকে ফোনে ব্ল্যাকমেল শুরু করে রাহুল। বন্ধুর স্ত্রী’কে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে বলে অভিযোগ। রাজি না হলে ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে দেওয়ার হুমকি দেয়। কিন্তু ওই গৃহবধূ নিজ সিদ্ধান্তে অনড় থেকে তাঁর স্বামীকে জানিয়ে দেন। মুম্বই থেকে তরুণীর স্বামী রাহুলকে ফোন করে এই ধরনের নোংরামি বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু রাহুল তাতে কর্ণপাত না করে বন্ধুর স্ত্রীয়ের নামে একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলে। তারপর একের পর এক ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতে থাকে। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গেলে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এদিনে গভীর রাতে কীটনাষক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তরুণী। সোমবার সকালে তাঁকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে সাণ্ডেলেরবিল হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বসিরহাট হাসপাতালে। তরুণীর স্বামী সন্ধ্যায় হিঙ্গলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিপদ বুঝে বাংলাদেশে পালানোর ছক কষে রাহুল। কিন্তু পুলিস সক্রিয় হয়ে কাঠাখালি সেতু থেকে রাহুলকে গ্রেপ্তার করে। রাহুল সর্দারকে বসিরহাটের মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।