বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
লাউডন স্ট্রিটে গাড়ি দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে আরসালানের গাড়ি চালানোর অতীত ইতিহাস ঘেঁটে দেখছেন তদন্তকারী অফিসাররা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে আগে কখনও কোনও কেস রুজু হয়েছে কি না। সেখান থেকেই তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা সম্ভব হবে শুক্রবার তিনি খেয়ালের বশেই অতিরিক্ত জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, নাকি এটি তাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। তা করতে গিয়েই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে অফিসারদের হাতে। তাঁরা আপাতত বিগত ছ-সাত মাসের তথ্য সংগ্রহ করার উপর জোর দেন। তা ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে মোট ৪৮টি কেস হয়েছে। যার মধ্যে ৪৩টি কেসই ‘ওভার স্পিডিং’ বা বেলাগাম গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য।
কীভাবে জানা গেল এই তথ্য? লালবাজার সূত্রে খবর, কোনও গাড়ি নিয়ম ভাঙলে তা ট্রাফিকের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এজন্য বিভিন্ন রাস্তায় স্পিডো মিটার বসানো রয়েছে। এর বাইরেও স্পিড রেডার গান রেখেও গাড়ির গতি পরীক্ষা করা হয়। যে সমস্ত গাড়ি নিয়মের বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত জোরে চলছে, তাদের ছবি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আইনভঙ্গকারীকে মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হয়।
কোন কোন এলাকায় এই ছ’মাসে ওভার স্পিডের জন্য কত কেস হয়েছে, তার নথি জোগাড় করা হয়। সমস্ত তথ্য এক জায়গায় মেলানো হয়। তাতে দেখা যায় আরসালানের জাগুয়ার গাড়ি রয়েছে। এমনকী চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তাঁর গাড়ির বিরুদ্ধে মোটর ভেহিকলসের ১৮৪-এর মতো কড়া ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে গাড়ির গতি এতটাই বেশি ছিল যে, সেখান থেকে জনগণের বিপদের আশঙ্কা ছিল। ফলে অফিসারদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, নিয়মভাঙা নেশায় পরিণত করেছিলেন তিনি। এমনকী অফিসাররা এও জানতে পারছেন, অনেক সময় আইন ভেঙেও পরিচিতির সুবাদে ছাড় পেয়ে গিয়েছেন আরসালান। বিগত ছ’মাসেই যদি কেসের সংখ্যা এই পর্যায়ে পৌঁছয়, তাহলে তার আগে কী হয়েছে, তা ভেবে চিন্তিত পুলিস কর্তারা। সেই কারণে ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে গাড়িটি কেনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট কতগুলি কেস হয়েছে আরসালানের ওই গাড়ির বিরুদ্ধে, তার নথি জোগাড় করা হচ্ছে। যাতে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
এদিকে, আদালতেও তাঁর বেপরোয়া গাড়ি চালানো নিয়ে রীতিমতো সরব হয়েছেন সরকারি কৌঁসুলি। কত জোরে তাঁর গাড়ি চলছিল, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। জেনেবুঝেই তিনি যে এত জোরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেন আদালতের কাছে। অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারার পাশাপাশি রবিবার ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৮ অর্থাৎ অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট ও ভাঙচুরের মতো কড়া ধারাও যুক্ত করা হয়েছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।