বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
স্থায়ীকরণের দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে কলকাতায় বিকাশ ভবনের সামনে অনশনে বসে পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চ। ওই রাতে পুলিস লাঠিচার্জ করে বিকাশ ভবনের সামনে থেকে তাদের তুলে দেয়। শনিবার দুপুর থেকে কল্যাণীর সরকারি বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে অনশন শুরু করেন শিক্ষকরা। সন্ধে ৭টার পর যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের আলো নিভিয়ে শিক্ষকদের উপর পুলিস নির্মমভাবে লাঠিচার্জ করে। পুলিসের মারে ২০ জনের বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা জখম হন। শিক্ষিকাদের শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে অভিযোগ। আন্দোলনকারীদের উপর হামলা হলেও উল্টে পাঁচ শিক্ষককে পুলিস গ্রেপ্তার করে।
এদিন ওই ঘটনার প্রতিবাদে থানার সামনে পার্শ্ব শিক্ষকরা অবস্থান শুরু করেন। তাঁদের মূল দাবি, গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষকদের মুক্তি দিতে হবে। হামলাকারী পুলিস কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্যমঞ্চের আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, ব্রিটিশদের মতো পুলিস আমাদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে। আমাদের উপর হামলা হল, অথচ পুলিস পাঁচজন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য তৃণমূল পার্শ্ব শিক্ষক সমিতির চেয়ারম্যান গোপাল দেবনাথ বলেন, কল্যাণীতে শান্তিপূর্ণ অনশন আন্দোলনে লাইট অফ করে পুলিসের নির্মম লাঠিচার্জের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কল্যাণীতে পার্শ্বশিক্ষকদের উপর পুলিসের লাঠিচার্জের ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। শিক্ষামহল এবং রাজনৈতিকমহলে এ নিয়ে সরকারের তুমুল সমালোচনা করা হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্রের বক্তব্য, যেভাবে পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন দমিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিস লাঠিচার্জ করা হল, তা কাম্য নয়। এর প্রতিবাদে আজ, সোমবার প্রত্যেক জেলায় প্রতিবাদ সভা করা হবে। সমালোচনায় মুখর হয়েছে অধ্যাপক সংহতি মঞ্চও। সংগঠনের সভাপতি তরুণ নস্কর বলেন, একদিকে তৃণমূল সরকার বিজেপি সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরোধিতা করার ভান করবে, আর প্রতিবাদ-আন্দোলনের ক্ষেত্রে একই আচরণ করবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। প্রতিবাদ জানিয়েছে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতিও। শিক্ষামহল ছাড়াও এই ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন রাজনৈতিক নেতারাও। বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, শিক্ষকদের নায্য দাবি মানতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস। তাদের তরফে কল্যাণী থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন কংগ্রেসের শীর্ষ ও জেলা নেতৃত্ব। বাম পরিষদীয় নেতা তথা সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেন, যেভাবে শিক্ষকরা বিভিন্ন সময় আক্রান্ত হচ্ছেন, তা কাম্য নয়। আন্দোলন করলেই যেভাবে সরকার আচরণ করছে, তা নিন্দনীয়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, যেভাবে পার্শ্ব শিক্ষকদের রাজ্য সরকারের প্রশাসন দ্বারা পুলিস দিয়ে পেটানো হল, তা যে কোন সভ্য সমাজের কাছেই কলঙ্কজনক অধ্যায়।