পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে ফের তৃণমূল পুরবোর্ড দখল করার পর বেহালায় কেইআইপি’র কাজ নিয়ে ত্রুটির বিষয়টি নজরে আসে। তখন দেখা গিয়েছিল, যে ধরনের কাজ করার কথা ছিল, তা হয়নি। যেকারণে জল যত্রযত্র শুধু দাঁড়িয়েই যেত না, তা বেরত প্রায় পাঁচ-ছ’দিন পরে। এডিবির তরফে যে কয়েক’শো কোটি টাকা বেহালা এলাকার নিকাশি উন্নয়নের জন্য দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, সেই কাজ কার্যত যে লোক দেখানো, তা বারবার দক্ষিণ শহরতলির এই অংশের জলবন্দি চেহারা দেখেই প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনিক কর্তাদের। প্রশ্ন উঠেছে, কেইআইপি’র আরেকটি কাজ নিয়েও। কলকাতা পুরভবনে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে কন্ট্রোল রুমে লাগানো হয়েছিল একটি অত্যাধুনিক মেশিন। কোথায় কত বৃষ্টি হচ্ছে, কত জল জমছে, ক’টি পাম্পিং স্টেশন চলছে, তার রিপোর্ট কন্ট্রোল রুমে বসে ওই মেশিনের মাধ্যমেই পাওয়ার কথা মেয়র পারিষদ-আধিকারিকদের। কিন্তু দেখা গেল, সেই মেশিন থেকে প্রাপ্ত তথ্য ভুলে ভরা। জল জমা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিচ্ছে না। কতগুলি পাম্প চলছে, তাও দেখাতে পারছে না মেশিন। সূত্রের খবর, শুক্রবার কন্ট্রোল রুমে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মেয়র। এদিন বেহালা-ঠাকুরপুকুর এলাকার বাসিন্দারা বলেন, আমরা জলবন্দি হয়ে থাকব কেন দিনের পর দিন? বৃষ্টি হলেই আমরা আতঙ্কে ভুগতে থাকি। প্রশাসন কবে স্থায়ীভাবে আমাদের সমস্যার সমাধান করবে?
তবে নিকাশি বিভাগের কর্তাদের একাংশের কথায়, ঘণ্টায় ৬ মিমি বৃষ্টি হলে তা নিষ্কাশন করার ক্ষমতা রাখে কলকাতা। সেখানে ১৮৬ মিমি বৃষ্টি হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। যা কার্যত রেকর্ড। বেহালার অবস্থা যে অত্যন্ত শোচনীয়, তা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। তার উপরে শুধুমাত্র সিপিটি খাল পাম্পিং স্টেশন অন্তর্গত বেহালা এবং লাগায়ো বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রায় ১৮২ মিমি হয়েছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী মোমিনপুর পাম্পিং স্টেশন অন্তর্গত এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে ১৭৬ মিমি। স্বাভাবিকভাবেই দক্ষিণ শহরতলির সংশ্লিষ্ট অংশের দুর্ভোগ যে আরও বেশ কয়েকদিন থাকবে, তা ইতিমধ্যেই স্বীকার করে নিয়েছেন পুরকর্তারা।
শুক্রবারের দুর্ভোগে শহরে যে অবস্থা হয়েছে, তারপরই মেয়র সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তিনি শনিবার সকাল থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পাম্পিং স্টেশনগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখতে বেরবেন। সেইমতো এদিন তিনি বালিগঞ্জ, পামারবাজার, মোমিনপুর পাম্পিং স্টেশনের অবস্থা দেখে রবীন্দ্র নগর এবং বেগোর খাল সংলগ্ন পাম্পিং স্টেশনে যান। বেহালা এবং মোমিনপুর এলাকায় ঢুকতেই মেয়রের নজরে আসে, চারপাশ জলে থৈ থৈ করছে। এলাকার নাগরিকরা হাঁটুসমান জল দিয়ে চলাচল করছেন। কারও কারও দোকান বা বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। চিরাচরিত দৃশ্যের যে তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি, তা এদিন মেয়রের সঙ্গে পরিদর্শনে যাওয়া আধিকারিকরাও বুঝতে পেরেছেন। এদিন অবশ্য মোমিনপুর পাম্পিং স্টেশনের পাম্পে প্লাস্টিক ঢুকে সামান্য সমস্যা তৈরি করে। মেয়র এদিন সবক’টি পাম্পিং স্টেশনের পাম্পগুলি ভালোভাবে খতিয়ে দেখেন। তাঁর কথায়, পাম্পগুলি যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছে। জল ভালোভাবেই নিষ্কাশিত হচ্ছে।