নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রেড রোডে সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়ায় বেপরোয়া গাড়ির আগ্রাসনের স্মৃতি ফিরে এল। রাতের শহরে ট্রাফিক আইন না মানা দ্রুতগতির এক গাড়ি কেড়ে নিল দুই পথচারীর প্রাণ। জখম হয়েছেন আরও একজন। শুক্রবার রাত ১.৫০ মিনিট নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে শেক্সপিয়র সরণী এবং লাউডন স্ট্রিটের সংযোগস্থলে। মৃত ও আহতরা বাংলাদেশি নাগরিক। মৃত দু’জন প্রতিবেশী দেশের ব্যাঙ্কিং সেক্টরে উচ্চপদে আসীন ছিলেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে কিছুদিন আগে কলকাতায় এসেছিলেন। শুক্রবার রাতে একটি রেস্তরাঁয় খাওয়া-দাওয়া করে হেঁটে ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের হোটেলে ফিরছিলেন। সেই সময়ে আচমকাই ওই মোড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দু’জনকে আহত অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আহত বাংলাদেশি নাগরিককে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘাতক গাড়ির চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও পরে জানা যায়, তিনি শহরের এক নামী রেস্তরাঁর মালিকপুত্র। শনিবার দুপুরে আরসালান পারভেজ নামে ওই মালিকপুত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিস জানিয়েছে, নিহত দুই বাংলাদেশি নাগরিকের নাম কাজি মহম্মদ মইনুল আলম (৩৬) এবং ফারহানা ইসলাম তানিয়া (২৮)। তাঁদের মধ্যে তানিয়া বাংলাদেশের ঢাকার এবং মইনুল আলম ঝিনাইদহের বাসিন্দা। শনিবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হতেই বাংলাদেশ ডেপুটি হাই-কমিশনেও তোলপাড় পড়ে যায়। নিহত মইনুল আলম ডেপুটি হাই কমিশনার তৌফিক হাসানের পরিচিত। তিনি জানান, সরকারি পদ্ধতি মিটিয়ে রবিবারই দু’জনের দেহ বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে, ডেপুটি হাই-কমিশনের এক কর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিসের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেছেন।
পুলিস জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি গাড়ি (জাগুয়ার) শেক্সপিয়র সরণী ধরে বেপরোয়া গতিতে এসে লাউডন স্ট্রিট থেকে আসা অপর একটি গাড়ির (মার্সেডিজ) পেটে সরাসরি ধাক্কা মারছে। তারপরই ঘাতক গাড়িটি পুলিস কিয়স্ক ভেঙে ফুটপাতে উঠে যায়। সেখানে তিন পথচারীকে পিষে দেয় সেটি। দুর্ঘটনায় মার্সেডিজ গাড়িটির চালক এবং যাত্রী সামান্য জখম হন। পুলিস তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ডিসি (দক্ষিণ) মিরাজ খালিদ বলেন, কলকাতার একটি নামী রেস্তরাঁর মালিকের ছেলে ঘাতক গাড়িটির চালক। তাঁর বিরুদ্ধে ৩০৪ (পার্ট-২) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।