বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
টালিগঞ্জ কাণ্ডে পুলিসের অভ্যন্তরীণ তদন্ত রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ওসি গোটা ঘটনা আপসে মিটিয়ে নিতে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে লালবাজারের যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিওর (এসওপি) রয়েছে, তা তিনি পালন করেননি। পদ্ধতি মেনে লালবাজারের কন্ট্রোল রুমকেও তা জানাননি। এমনকী লালবাজারের শীর্ষ কর্তারাও সোমবার সকালে ওই ঘটনার বিষয়টি জানতে পারেন। ঘটনা পুলিস কমিশনার পর্যন্ত গড়ায়। রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন পদস্থ কর্তারা। ডিসি সাউথের জমা দেওয়া তদন্ত রিপোর্টে গোটা ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে। এরপরই অনুপবাবুকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে তাঁকে স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও রিজার্ভ ফোর্সের মতো গুরুত্বহীন জায়গায় না পাঠালেও বদলি করে লালবাজার বাকি অফিসারদেরও এর মাধ্যমে কড়া বার্তা দিয়েছে। বলা হয়েছে, এসওপি মানা না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে বাহিনীর সুনাম নষ্ট হয়, এমন কোনও কাজ বরদাস্ত করা হবে না। এক্ষেত্রে আপসের কোনও জায়গা নেই।
এদিকে, এই ঘটনায় গা ঢাকা দিয়ে থাকা অভিযুক্ত আকাশকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিস। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অক্ষয় ও রণজয়কে। সিসিটিভি’র ফুটেজ দেখে তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পারেন, কনস্টেবল বিমান দাসকে মারধর করেছিল আকাশ ও তার সঙ্গীরা। তারপরই তার খোঁজ শুরু হয়। জানা যায়, সে চেতলা এলাকায় রয়েছে। রাতে তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। পুলিস জেনেছে, রণজয় পুলিসের হাত ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ফোন করে আকাশের পিসি পুতুলকে। বলে, পুলিস তাদের মারধর করেছে। দ্রুত দলবল নিয়ে থানায় আসতে হবে। এরপর পুতুল তার বাহিনী নিয়ে হাজির হয় থানায়। সেই দলেই ছিল আকাশ। বুধবার পিসি ও ভাইপো সহ মোট পাঁচজনকে পুলিস আলিপুর আদালতে তোলে। পুলিসের তরফে এদিন ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৩২ ধারা (কর্তব্যরত পুলিস কর্মীদের মারধর) যুক্ত করার আবেদন জানানো হয়। আদালত তা মঞ্জুর করে। সেই সঙ্গে ধৃতদের পুলিসি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। তবে প্রথম দিনেই কেন এই ধারা যুক্ত করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিসের ব্যাখ্যা, সমস্ত বিষয় ও সিসিটিভি’র ফুটেজ তখনও খতিয়ে দেখা হয়নি। তা করার পরই এই ধারা যোগ করার আবেদন জানানো হয়।
তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রায় ছ’মাস হল পুতুলের চোলাই ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিস। যে কারণে তার ক্ষোভ ছিল পুলিসের প্রতি। কয়েকশো যুবক-যুবতী তার অধীনে এই কাজ করত। ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় তাদেরও সমস্যা তৈরি হয়। যে কারণে ক্ষোভ বাড়ছিল। টালিগঞ্জে পুলিস মারধর করেছে তার এলাকার ছেলেদের, একথা জানার পরই রাগ মেটাতে পুতুল তার বাহিনী নিয়ে থানায় চলে আসে। এরপর চলে তাণ্ডব।
বুধবার মেনকা সিনেমা হল এলাকায় গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিসের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) মুরলীধর শর্মা। মঙ্গলবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে মোট ১৫ জনকে ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লেক এলাকায় নিয়মিত তোলা আদায়, মদ-গাঁজার আসর বসে, এমন অভিযোগ আসায় তিনি এদিন সেখানে গিয়েছিলেন।