বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পুলিসের কাছে অভিযোগ অনুযায়ী, একটি অ্যাপে আইনের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া ওই তরুণীর প্রোফাইল দেখে ওই সংস্থার মালিক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তাঁদেরই খরচে থাইল্যান্ড নিয়ে যাওয়ার অফার দেন। একইভাবে অন্যান্য ব্লগারদেরও নিয়ে যাওয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিল, সোশ্যাল মিডিয়ার তাঁদের অনেক অনেক ফলোয়ার থাকায় ওইসব জায়গার ছবি তুলে তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্যাগ করলে সংস্থার প্রচার বাড়বে। তরুণী বলেন, আমরা ১৩ জুলাই থাইল্যান্ডে পৌঁছই। আমরা ছাড়াও সংস্থার কর্ণধার সস্ত্রীক ও একজন মহিলা ছিলেন। এছাড়াও গিয়েছিল আরও একটি পরিবার।
তরুণীর অভিযোগ, প্রথম থেকে ওই সংস্থার কর্ণধারের মতলব ভালো ছিল না। তাই আগেভাগেই সতর্ক হয় যাই। বাকি মেয়েদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিলাম। এরপর আমাকে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়। যে আটজনকে সংস্থাটি নিয়ে যায়, তাঁদের সকলের পাসপোর্ট নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। নানাভাবে হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল। তরুণী বলেন, পাসপোর্ট ওই ব্যক্তির হেফাজতে থাকায় আমি ঝামেলা বাড়াইনি। কিন্তু ফুকেট পৌঁছনোর পর হঠাৎ একটি ঘরে নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে মারধর করা হয়। আমার ফোন সহ যাবতীয় জিনিস কেড়ে নেওয়া হয়। আমি আমার এক বন্ধুকে হোয়াটসঅ্যাপ করে সব কথা জানালে অত্যাচার আরও বেড়ে যায়। এমনকী শাসানিও দেওয়া হয়।
এদিন বাড়িতে বসে তরুণীর মা বলেন, তাঁদের ফোন করে ওই ব্যক্তিরা দু’লক্ষ টাকা চায়। বাধ্য হয়েই ওই সংস্থার সঙ্গে ট্যুর চালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছিল তাঁর মেয়ে। কোনওভাবে একদিন বেড়াতে বেরিয়ে একটি জায়গায় গিয়ে লুকিয়ে একজনের থেকে ফোন নিয়ে আমাকে ফোন করে ও গোটা ঘটনা জানায়। টাকা না দিলে কলকাতা ফিরতে দেওয়া হবে না, এই আতঙ্ক থেকেই ও আমাকে দ্রুত টাকা পাঠাতে বলে। পুলিসের কাছে অভিযোগ অনুযায়ী, তরুণীর এক বান্ধবী বিষয়টি জেনে থাইল্যান্ডের দূতাবাসে ই-মেল করেন। পাশাপাশি এক আইনজীবীর পরামর্শে কলকাতায় বিদেশ মন্ত্রকের অফিসে গিয়ে দেখা করেন তরুণীর মা। তরুণীর মায়ের কথায়, ওই অফিসে বসে কথা বলার সময়ও অভিযুক্তরা ফোন করে টাকা চায়। এরপরই মন্ত্রক গোটা বিষয়টি ই-মেল করে তাদের জানাতে বলে।
এদিন তরুণী বলেন, দূতাবাসের বিষয়টি জানাজানি হতেই আমাকে মারধর শুরু হয়। একটি ঘরে আটকে রাখার চেষ্টা হয়। তবে তাঁরা চাবি খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় আমি সেখান থেকে পালিয়ে একটি পরিবারের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর থাইল্যান্ডে ভারতীয় দূতাবাসের এক অফিসার ও সেখানকার পুলিস অফিসার গিয়ে আমাকে উদ্ধার করেন। পুলিস জানিয়েছে, দুই মহিলা সহ মোট তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিস সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের মধ্যে একজন অনাবাসী ভারতীয়। অভিযুক্ত দুই মহিলা কলকাতা ও দিল্লির। তৃতীয় জন কলকাতার বাসিন্দা।