পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বৃহস্পতিবার ভোরে খড়দহ থানার কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের এইচএস স্টুডিওর কাছে গাড়ি থেকে নলি কাটা মৃতদেহ উদ্ধার হয় চালক সুজিত সাউয়ের। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে এক দম্পতি। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃতের বাড়ি টালা থানার নতুনপাড়ার চণ্ডীতলা এলাকায়। ওই এলাকারই তরুণী সীমা শর্মার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সীমার প্রথম পক্ষের স্বামী বছর দুই আগে মারা গিয়েছেন। স্বামীর মৃত্যুর পর সুজিতের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায় সীমা। সীমার বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল সুজিতের। এলাকার বাসিন্দারা দুজনকে একসঙ্গে ঘোরাঘুরি করতেও দেখেছেন। কিন্তু, এরই মাঝে সীমার অ্যাম্বুলেন্স চালক পিটারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পুরনো প্রেমিকের সম্পর্ক থেকে সীমা বেরিয়ে আসতে চাইছিল। কিন্তু নাছাড়োবান্দা ছিলেন সুজিত। পুরনো প্রেমিককে না জানিয়ে মাস কয়েক আগে সীমা পিটারকে রেজিস্ট্রি বিয়ে করে ফেলে।
পুলিস সূত্রের খবর, আর জি কর হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা পিটারের সঙ্গে আগে থেকেই আলাপ ছিল সুজিতের। কিন্তু, ত্রিকোণ সম্পর্কের জেরে সুজিত ও পিটারের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পুলিসি জেরায় ধৃতরা স্বীকার করেছে, সুজিত প্রায়শই সীমার বাড়িতে আসতেন। তা একটা সময় অসহনীয় হয়ে উঠেছিল সীমার কাছে। বাধ্য হয়ে সে পিটারকে সুজিতের কথা জানায়। এরপরেই তারা দু’জনে ক্যাব চালক সুজিতকে খুনের ছক কষে। সোমবার সুজিত যে ভাড়া নিয়ে দীঘায় যাচ্ছে, তা তার মায়ের কাছে জেনেছিল সীমা। পরিকল্পনা মাফিক বুধবার রাতে পুরনো প্রেমিকের মোবাইলে ফোন করে সে। সেই সময় সুজিত দীঘা থেকে গাড়ি নিয়ে ফিরছিলেন। পাইকপাড়া থেকে তাঁর গাড়িতে ওঠে সীমা। আর পিটার ওঠে সোদপুর থেকে। গাড়ির পিছনের সিটে ডানদিকে বসেছিল পিটার এবং বাঁদিকে সীমা।
ধৃতদের জেরা করে পুলিস জানতে পেরেছে, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের এইচএস স্টুডিওর কিছুটা দূরে গাড়ি দাঁড় করাতে বলে পিটার। গাড়ি দাঁড়াতেই আচমকা পিটার সুজিতের নলিতে ধারালো ছুরি চালায়। ছুরি চালানোর পর নেতিয়ে পড়েন সুজিত। তিনি গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে ঝুঁকে পড়েন। এরপরেই স্বামীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় সীমার। সীমা জেরায় স্বীকার করেছে, শেষ মুহূর্তে পুরনো প্রেমিকের প্রতি দুর্বল হয়ে উঠেছিল সে। একেবারেই মৃত্যু চাইছিল না। কথা কাটাকাটির পর স্ত্রীকে একা ফেলে লরি দাঁড় করিয়ে উঠে উল্টোডাঙায় চলে যায় পিটার। পুরনো প্রেমিক মারা গিয়েছে জেনেও দীর্ঘক্ষণ গাড়িতে একা চুপচাপ বসেছিল সীমা। পুলিসের টহলদারি ভ্যান দেখতে পেয়ে গাড়ি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করে সে। তবে সে পুলিসের নাগালের বাইরে যেতে পারেনি। তার আগেই তাকে পাকড়াও করে পুলিস।
খড়দহ থানার পুলিস জানিয়েছে, ধৃত দম্পতিকে সাত দিনের পুলিস হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের জেরা চলছে। গাড়ি থেকে যে ছুরি উদ্ধার হয়েছে, তার সঙ্গে ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলিয়ে দেখা হবে দুজনের। বারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের ডিসি (জোন ২) আনন্দ রায় বলেন, ধৃতদের জেরা চলছে। তদন্ত চলছে।