বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
হালিশহর পুরসভার মোট আসন ২৩টি। এর মধ্যে একজন নির্দল কাউন্সিলার জেলে রয়েছেন। একজন কাউন্সিলার পদ্মফুলের প্রতীকে জয়ী হয়েছেন। ২১ জন কাউন্সিলারের মধ্যে ১৭ জন লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে চেয়ারম্যান অংশুমান রায় তৃণমূলেই ছিলেন। গত সপ্তাহে বিজেপিতে যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ৯ জন ফিরে আসেন তৃণমূলে। তবে ৯ জন ফিরে এলেও বিজেপি হালিশহর পুরসভা দখলের ছক কষছিল। এরই মাঝে ‘গেমপ্ল্যান’ খেলে শাসক দল বলে বিজেপির অভিযোগ। গত ১৬ জুলাই পুরসভার দলীয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূলের ৮ জন কাউন্সিলার। ১৭ জুলাই পুরসভার সব কাউন্সিলারকে অনাস্থার তলবি সভার দিন জানিয়ে হোয়াটস অ্যাপ করা হয়। একই সঙ্গে চিঠি স্পিডপোস্ট করা হয়।
হোয়াটস অ্যাপে জানতে পেরেই বিজেপির কাউন্সিলাররা হাইকোর্টে একটি মামলা করেন। ওই মামলার শুক্রবার শুনানি হয়। তাতে হাইকোর্ট ভোটাভুটির উপর আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশের নির্দেশ দেয়। এদিকে, বিজেপি যে আদালতে গিয়েছে, সেই খবর ছিল তৃণমূলের কাছে। অনাস্থার তলবি সভার সময় ধার্য ছিল বিকেল ৩টে। কিন্তু তৃণমূলের কাউন্সিলারা দুপুর ২টোর মধ্যেই পুরসভায় একে একে জড়ো হন। চেয়ারম্যান সহ ১৩ জন কাউন্সিলার ৩টে বাজার কিছু আগেই পুরসভার সভাকক্ষে ঢুকে পড়েন। এবং ৩টের সময় অনাস্থার তলবি সভা হয়। তাতে অনাস্থার বিপক্ষে ১৩টি জনই সায় দেন। অর্থাৎ চেয়ারম্যান অংশুমান রায়ই থাকলেন।
দলীয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেও বিপক্ষে গেলেন কেন? তৃণমূলের কাউন্সিলার প্রণব লৌহ বলেন, চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমাদের মতপার্থক্য হয়েছিল। তাই আমরা অনাস্থা এনেছিলাম। এর মধ্যে উনি আমাদের ডাকেন এবং আমাদের মান অভিমান, ভুল বোঝাবুঝি শেষ হয়। এদিন আমরা অনাস্থা আনা ৮ জনই বিপক্ষে ভোট দিয়েছি। আমরা পুরসভার উন্নয়ন চাই। গত দুই মাস ধরে উন্নয়ন থমকে রয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান অংশুমান রায় বলেন, আদালতের কোনও নির্দেশিকা আমরা পাইনি। অনাস্থার তলবি সভা হয়েছে। তাতে অনাস্থার বিপক্ষে ১৩টি জন কাউন্সিলারই সায় দিয়েছেন। পুর আইন অনুযায়ী চলব। আদালতের নির্দেশ পেলে পরবর্তীকালে আইন অনুযায়ী চলব।
অন্যদিকে, বিজেপির কাউন্সিলার রবিশঙ্কর সিং বলেন, অনাস্থার নাটক তৃণমূলের একটা চক্রান্ত। আমাদের অনাস্থাকে ৬ মাস আটকানোর জন্য এটা ওরা নাটক করল। তবে এই অনাস্থার তলবি সভা বৈধ নয়। আমরাই এই পুরসভায় ক্ষমতায় আসব। বিজেপির সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র বলেন, আদালত অনাস্থার অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিয়েছে। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আদালতের নির্দেশ মতো আমরা চলব।