বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
ভাটপাড়ায় বোমাবাজির ঘটনা অহরহ ঘটছে। দুই দুষ্কৃতী গোষ্ঠীই শয়ে শয়ে বোমা মজুত রেখে এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি করছে। ভাটপাড়ার অশান্তিতে এই প্রথমবার বোমা বাঁধতে গিয়ে মৃত্যু হল একজনের। কাঁকিনাড়ার বাজার পেরিয়ে রামনগর কলোনি। এই কলোনিতে বিপিন গাঙ্গুলি বিদ্যাপীঠের ক্যাম্পাসের মধ্যে রামনগর যুবক সংঘ ও বিজেপির দলীয় কার্যালয় রয়েছে। ক্লাব ও বিজেপির পার্টি অফিসের দূরত্ব একটি দেওয়াল। বৃহস্পতিবার রাতে ক্লাবের ছাদে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এবং বিস্ফোরণে মারা যান বিশ্বনাথ সরকার (৫৮)। তাঁর বাড়ি রামনগর কলোনিতেই।
মৃতের দাদা ভোলানাথ সরকার বলেন, আমরা বিজেপি সমর্থক। আমার ভাইও বিজেপি করত। ভাই শ্রমিকের কাজ করত। তবে গত ছয় মাস ধরে অসুস্থতার কারণে কাজে যাচ্ছিল না। ওই দিন রাতে আমি বাইরে ছিলাম। এসে শুনি ক্লাবের ছাদে বোমাতে জখম হয়েছে দাদা। জখম দাদাকে কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানেই দাদা মারা যায়।
বৃহস্পতিবার রাতে বোমা বিস্ফোরণের পর শুক্রবার রামনগর কলোনি ছিল শুনশান। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ গিয়ে দেখা গেল স্কুলটি বন্ধ। বিদ্যালয়ে পড়ুয়া বা শিক্ষকরা কেউ আসেননি। ওই জায়গায় পাহারায় রয়েছে র্যা ফ। বিদ্যালয়ের উল্টোদিকে বাড়ি শ্যামলী দাসের। তিনি বলেন, রাতে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ বিকট আওয়াজ হয়। বাড়ির বাইরে এসে দেখি ক্লাবের পাশে প্রচুর লোকজন। পরে পুলিস আসে।
শাসকদলের ভাটপাড়া বিধানসভা কমিটির আহ্বায়ক সোমনাথ শ্যাম বলেন, রামনগর কলোনির বিজেপির পার্টি অফিস বোমা তৈরির কারখানা। শুধু রামনগর নয় ভাটপাড়ার সবকটা বিজেপির পার্টি অফিস এখন বোমা বারুদের স্তূপ। ভাটপাড়ার অশান্তির মূলে অর্জুন সিং। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা তার রিপোর্টও দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। নরেন্দ্র মোদি তাঁকে ডেকে ধমকও দিয়েছেন।
বারাকপুরের বিজেপি এমপি অর্জুন সিং বলেন, যিনি মারা গিয়েছেন, তিনি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি অসুস্থ। তিনি কী করে বোমা বাঁধবেন? তৃণমূলের বাহিনী এসে ক্লাবের ছাদে বোমা ছোঁড়ে। ওদের টার্গেট ছিল আমাদের দলের এক যুব নেতাকে আক্রমণ করার। যুব নেতা ততক্ষণে বেরিয়ে গিয়েছেন। ছোঁড়া বোমা এসে লাগে ওই বিশ্বনাথের উপর। অর্জুন বলেন, এখানে তৃণমূল এবং পুলিস অশান্তি পাকাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে আমাকে কিছু বলেননি। তৃণমূলই এখানে অশান্তি জিইয়ে রাখছে।
যদিও পুলিস জানিয়েছে, মৃতের দুই হাতের আঙুল উড়ে গিয়েছে। পেটেও গভীর ক্ষত রয়েছে। বাইরে থেকে বোমা ছুঁড়লে হাতের আঙুল উড়ে যাবে কেন? এই প্রশ্নের জবাব অবশ্য দিতে পারেননি বিজেপি নেতারা। পুলিসের বারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন-১) অজয়কুমার ঠাকুর বলেন, বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে একজনের মৃত্যু হয়েছে। কাঁকিনাড়ার বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েকটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।