পুরসভায় তাঁর সতীর্থদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তা কার্যকর হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতে না হতেই মেয়র পদ ছেড়েছেন তিনি। পদত্যাগের সময় পুরসভার দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন। যা বস্তুত ঘুরিয়ে দলকেই আক্রমণের শামিল। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, দল তাঁকে মেয়র পদে বসিয়েছে। তাঁকে কেউ কোনও কাজে বাধা দেয়নি। তাহলে দুর্নীতি নিয়ে মেয়র থাকাকালীন নিষ্ক্রিয় ছিলেন কেন? সব্যসাচীর উদ্দেশেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন পার্থবাবু । উল্লেখ্য, সব্যসাচীকে মেয়র পদ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। সব্যসাচী তাতে আমল দেননি। পার্থবাবুর দাবি, বিধাননগরের তৃণমূল পুরদল যখন তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে উদ্যোগী হয়েছে, তখন পরাজয় নিশ্চিত জেনে সরে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু যেভাবে তিনি দলের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়েছেন, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান তৃণমূল মহাসচিব। ঘটনাচক্রে পার্থবাবু তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান। ইতিমধ্যেই রাজ্য তৃণমূল পুরদলের নেতা, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সব্যসাচীর দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের রিপোর্ট শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে জমা দিয়েছেন। মেয়রের পদ ছাড়লেও দলের কাউন্সিলার ও নিউটাউন রাজারহাটের বিধায়ক পদ আঁকড়ে রয়েছেন তিনি। এই অবস্থায় বিধায়ক পদ কেন ছাড়ছেন না? প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী তাপস রায়। তিনি বলেন, দলের বেশিরভাগ কাউন্সিলার তাঁর বিপক্ষে। তবুও আদালতে গিয়ে টালবাহানা করতে চাইছিলেন সব্যসাচী। অপকর্ম ঢাকতে নিজের ইস্তফাকে মহিমান্বিত করার লক্ষ্যে যেভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে নেতাজি সুভাষ বসু এমনকী মুজিবর রহমানের উল্লেখ করেছেন, তা হাসির খোরাক হয়েছে। তাপসবাবু বলেন, সৎ সাহস থাকলে এত বাগাড়ন্বর না করে বিধায়ক ও কাউন্সিলার পদ থেকে পদত্যাগ করুন সব্যসাচী।
সব্যসাচীকে কি আগামী ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের কর্মসুচিতে আসতে বলা হবে? পার্থবাবু বলেন, শহিদদের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য আলাদা করে কাউকেই আমন্ত্রণ জানানো হয় না। সব্যসাচী আসবেন কি না, তা তাঁকেই ঠিক করতে হবে। তবে, দলকে ও যেভাবে অস্বস্তিতে ফেলছে, তাতে সাংগঠনিক পদক্ষেপ অনিবার্য হয়ে উঠছে বলেই মনে করা হচ্ছে। পার্থবাবু জানান, দলের শৃঙ্খলার সঙ্গে কোনও রকম আপস করা হবে না। শেষ পর্যন্ত দল কী শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করে, এখন সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।