কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
প্রসঙ্গত, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বনগাঁ পুরসভায় টানাপোড়েন রাজনীতি দেখতে দেখতে ক্লান্ত শহরবাসী। আর এই টানাপোড়েনের জেরেই পুর পরিষেবা কার্যত শিকেয় উঠেছে। জঞ্জাল সাফাই, পানীয় জল, পথবাতির মতো সাধারণ পরিষেবার সিংহভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। পুরসভায় শাসকদলের ২০ জন কাউন্সিলারের মধ্যে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১৪ জন কাউন্সিলারের অনাস্থা প্রস্তাব পেশ, তার মধ্যে ১২ জন কাউন্সিলারের বিজেপিতে যোগ, হাইকোর্টের নির্দেশে আস্থা ভোটের দিন ঘোষণা পর্যন্ত পরিস্থিতি তাও নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে আস্থা ভোটকে ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা দেখে হতভম্ব শহরবাসী। পুলিসকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি, বোমাবাজি, পুরসভা লাগোয়া বাড়ির কাচ ভাঙচুরের ঘটনা, পুলিসের স্টান গ্রেনেড ছোঁড়া আগে কখনও ঘটেছে বলে স্মরণ করতে পারছেন না শহরের বহু মানুষ।
এই পরিস্থিতিতে বুধবার দুপুর চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য, ভাইস চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা রায় সহ তৃণমূলের ৯ জন কাউন্সিলার ও কংগ্রেসের একজন কাউন্সিলার পুরসভায় যান। এদিন বিকেল পর্যন্ত পুরসভায় বসে বিভিন্ন ধরনের প্রশাসনিক কাজ করেন শঙ্করবাবু। অন্যদিকে, বিজেপির কাউন্সিলাররা এদিন আইনি লড়াইয়ে জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানে আইনজীবীর মাধ্যমে, মঙ্গলবারের ঘটনার ফুটেজ, বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের কাটিং জমা দেওয়া হয়। এরপর বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ পেশ করতে বলেন বলে বিজেপি শিবিরের দাবি। বিজেপির তরফে আজ, বৃহস্পতিবার ফের আদালতে যাওয়া হবে।
আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি এদিন বিকেলে বনগাঁ শহরের মোতিগঞ্জ থেকে রেল বাজার পর্যন্ত বিজেপি ধিক্কার মিছিল বের করে। ওই মিছিল থেকে তৃণমূলের পাশাপাশি পুলিস ও প্রশাসনকেও তীব্রভাবে আক্রমণ করে বিজেপি নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারের আস্থাভোটের ফলাফল কী হবে, নাকি ফের নতুন করে আস্থা ভোট হবে তানিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে বনগাঁ শহরে। যদিও এদিন চেয়ারম্যান শঙ্করবাবু বলেন, হাইকোর্টের রায় মেনেই আমরা আস্থা ভোটে হাজির হয়েছিলাম। প্রশাসনের ঠিক করা সময় অনুযায়ী বিকেল ৩টা থেকে ৩টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত বৈঠক হয়েছে। কিন্তু, সেই সময় পর্যন্ত বিজেপির কাউন্সিলাররা আসেননি। আমরা চলে যাওয়ার পর বাজার থেকে কাগজ এনে তাতে কী সব সই করিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এতে আমাদের কিছু বলার নেই। এখনও আমি পুরসভার চেয়ারম্যান পদে রয়েছি। মানুষকে পরিষেবা দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য। সেই কারণে পুরসভার কাজকর্ম সচল করতে সকলকে নিয়ে এসেছি। বিজেপির হাইকোর্টে যাওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, ওনারা যেতে পারেন। আদালত যা রায় দেবে মেনে চলব। বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে পুলিস ও তৃণমূল একযোগে আমাদের কাউন্সিলারদের আটকে রেখেছিল। কিন্তু, শেষপর্যন্ত আমাদের ১১ জন কাউন্সিলার পুরসভায় গিয়ে মিটিং করে রেজুলিউশন করে এসেছেন। আমরা এদিন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। বিচারপতি বৃহস্পতিবার সমস্ত কিছু জমা দিতে বলেছেন। আমরা আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি এলাকার মানুষকে নিয়েও আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজ হোক বা কাল বনগাঁ পুরসভা বিজেপির দখলে আসবে। কারণ, বনগাঁবাসী এখন বিজেপিকে চাইছে।