আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
এর আগে সকালে ফিরহাদ বলেন, আমি ওকে ফোন করে বলি, সব্যসাচী তোমায় দল মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলছে। তুমি ইস্তফা দাও। বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর হাতে ওকে ইস্তফাপত্র জমা দিতে বলি। ও আমায় জানায়, আমি ইস্তফা দিয়ে দেব। পরে ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, সব্যসাচী ভুল করেছেন এবং এমন ভুল যাতে আর না করেন, সে বার্তা কঠোর ভাবেই তাঁকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওঁর যাওয়ার হলে চলে যাক। এদিকে, দলের মহা সচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সব্যসাচী দলের ইমেজ নষ্ট করছে।
এদিকে, বিধাননগর পুরসভার মেয়র পদ থেকে সব্যসাচী দত্তকে সরতে হলে, কে বসবেন ওই পদে? দলের অন্দরে এনিয়ে ইতিমধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। দলীয় নেতৃত্ব বিভিন্ন নাম নিয়ে আলোচনা করলেও, দলের নিচুতলার কর্মী¬-নেতা থেকে শুরু করে কাউন্সিলার সকলের মধ্যেই এনিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। সোমবার সারাদিন পুরসভার কাউন্সিলার রুম থেকে বিভিন্ন মেয়র পরিষদ সদস্যদের ঘর এই আলোচনায় বারবার সরগরম হয়ে ওঠে। প্রত্যেকের মুখে একটাই প্রশ্ন ছিল, পরবর্তী মেয়র কে হতে চলেছেন?
পরবর্তী মেয়র হিসেবে দৌড়ে রয়েছে পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী এবং ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের নাম। যদিও দলের অন্য একটি সূত্র বলছে, ওই দু’জনকে না করে তৃতীয় কোনও কাউকেও মেয়র করা হতে পারে। সেবিষয়ে সল্টলেকেরই কোনও মহিলা নেত্রী এগিয়ে থাকতে পারেন বলে দলীয় একটি সূত্র দাবি করছে। যদিও অন্য একটি সূত্র পাল্টা দাবি করছে, আগে তো অনাস্থা ভোটে বর্তমান মেয়র সব্যসাচী দত্তকে হারাতে হবে, তারপরে নতুন মেয়র নির্বাচিত করার প্রশ্ন উঠছে। এনিয়েই সোমবার বারবার বিভিন্ন কাউন্সিলারদের মধ্যে আলোচনা চলেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। নিজেদের মতো করে বহু কাউন্সিলারই পুরসভার ঘনিষ্ঠ নেতাদের ঘরে বসে দফায় দফায় বৈঠক করে আলাদা করে। অনেক আবার দল বেঁধে ডেপুটি মেয়রের ঘরে গিয়েও বৈঠক করেন। যদিও এবিষয়ে সরাসরি কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। তাপস চট্টোপাধ্যায় বারবারই বলেছেন, মেয়র কে হবেন? সেবিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে। অন্যদিকে কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, দল যদি তাঁকে মেয়র করে, তাহলে তিনি দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। যদিও কেউই মেয়র হওয়া নিয়ে নিজে থেকে কিছু বলতে রাজি হননি। সকলেই দলের কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছেন।
সোমবার বিধাননগর পুরসভায় দেড়টার সময় ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে হাজির হয়েছিলেন একাধিক কাউন্সিলার এবং মেয়র পরিষদ সদস্য। দলীয় সূত্রের দাবি, রবিবার পুরভবনে হাজির থাকা সমস্ত মেয়র পরিষদ সদস্য এবং কাউন্সিলারদেরই এদিন আসতে বলা হয়েছিল। যদিও অনেকেই সেখানে অনুপস্থিত থেকে পরবর্তী সময়ে আরও বেলায় পুরসভায় নিজেদের নিজেদের কাজে যোগ দেন। এনিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। সব্যসাচীবাবু পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে ভোটাভুটিতে দেখে নেওয়ার কথা বলায়, জল্পনা আরও বেড়ে গিয়েছে।
এমনকী সব্যসাচীবাবু পুরসভা ছাড়ার আগে আচমকাই চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর ঘরে চলে আসেন। তা নিয়েও কানাঘুষো শুরু হয়। সব্যসাচী দাবি করেন, বারাসত কোর্টে একটি পুরানো মামলা রয়েছে। তিনি সহ একাধিক তৃণমূল নেতা¬-নেত্রীর বিরুদ্ধে, মঙ্গলবার সেই মামলারই দিন রয়েছে। তাই সেবিষয়ে কথা বলার জন্যই তিনি কৃষ্ণা চক্রবর্তীর ঘরে ঢোকেন। অন্যদিকে, কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, উনি এখনও মেয়র রয়েছেন। তাই আসতেই পারেন। তাঁরা মানুষকে শুধু পরিষেবা দিতে চান। সেবিষয়ে আলোচনা চলতেই পারে।
এদিকে, এদিনের ফোনাফুনি নিয়ে সব্যসাচী দত্ত দাবি করেন সোমবারই মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ফোন করেছিলেন। যদিও সব্যসাচী দত্তের মন্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বিকালে বলেন, বিগত কয়েকমাসে আমার সঙ্গে সব্যসাচী দত্তের কোনও কথা হয়নি। আমিও ওকে ফোন করিনি, ও আমাকে ফোন করেনি। হঠাৎ করে আমার নাম কেন ও নিল, তার ব্যাখ্যা ও দিতে পারবে। তবে আমি মনে করি, এইভাবে আমার নাম জড়ানো ঠিক হয়নি।