বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
দৃশ্য ২: এসএসকেএম হাসপাতালে আউটডোরের সামনে পাঁচিলের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ইন্দ্রজিৎ পাল। পাশে বসে রয়েছেন তাঁর জামাইবাবু। আউটডোর বন্ধ থাকায় গত সপ্তাহে আসতে পারেননি। বললেন, জামাইবাবুর টিবি হয়েছে। স্থানীয় ডাক্তার দেখেছেন। এখানে আউটডোর কবে খুলবে, তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
শহরের নামকরা এই দুই হাসপাতাল ঘুরে এমন বহু দৃশ্যই দেখা গিয়েছে বুধবার। এদিন বহু রোগীই এসেছিলেন যাঁরা হাসপাতালে অচলাবস্থার সময়ে কেবল দিন গুনে গিয়েছেন রোগের যন্ত্রণা সহ্য করে। আন্দোলনের দিনগুলিতে ভর্তি থাকা রোগীদের আত্মীয়রা প্রবল দুশ্চিন্তায় সময় কাটিয়েছেন। সেই দুশ্চিন্তার মেঘ এখন উধাও। স্বাভাবিক ছন্দে চিকিৎসা পরিষেবা চলেছে হাসপাতাগুলির জরুরি বিভাগেও। হাসপাতালে অচলাবস্থা কাটার পর থেকেই সিদ্ধান্ত মতো জরুরি বিভাগে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এদিনও তার ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। পুলিসকর্মীরা রোগীর আত্মীয়দের বুঝিয়ে দিচ্ছেন বিষয়টি।
এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে কথা হচ্ছিল এক পুলিসকর্মীর সঙ্গে। তিনি বললেন, অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে রোগীদের স্ট্রেচারে চাপিয়ে জরুরি বিভাগে অনেক সময়ই চারজন করে ঢুকছেন ঠিকই, কিন্তু রোগীর পরিজনদের বুঝিয়ে দু’জনকে বাইরে বের করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। জরুরি বিভাগে ভিড় করলে চিকিৎসায় সমস্যা হতে পারে বলে মানছেন রোগীদের আত্মীয়রাও।
এদিন সকাল থেকেই হাসপাতালগুলির আউটডোরের সামনে সেই পরিচিত ভিড় দেখা গিয়েছে। এনআরএস হাসপাতালে ঝিলের ধারে বসেছিলেন মেদিনীপুরের ময়নার বাসিন্দা জয়িতা মাইতি। তাঁর কোলে চার মাসের শিশু। ঠাঠা রোদের মধ্যে পাশে বসে দু’জনকে সমানে পাখার হাওয়া করে যাচ্ছেন শ্বশুরমশাই। জয়িতাদেবী বললেন, বাচ্চার ম্যানেনজাইটিস হয়েছে। আউটডোর চালু হওয়ায় ছুটে এসেছি। ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরব। ঝিলের ধারেই বসে ছিলেন এক দম্পতি। তাঁদের একজন জানালেন, এতদিন ধরে কেবল হাসপাতালের খবর পড়ে গিয়েছি। দিন গুনেছি, কবে স্বাভাবিক হবে হাসপাতাল। সবকিছু মিটে যাওয়ায় আর সময় নষ্ট করিনি। কে ভুল আর কে ঠিক, এই বিতর্ক এখন থাক। পরিষেবা শুরু হয়েছে। আর যেন বন্ধ না হয়, এটাই চাই।
এসএসকেএম হাসপাতালে কথা হচ্ছিল মুকুন্দপুরের বাসিন্দা স্বপ্না ভারতীর সঙ্গে। তিনি বলেন, কোমড়ে খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। এতদিন যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ খেয়ে গিয়েছি। আজ ডাক্তার দেখালাম। কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মধ্যে অসুস্থ স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে রবীন দোলুই বলেন, স্ত্রীর পেটে জল জমেছে। এতদিন আসতে পারিনি পরিষেবা স্বাভাবিক না থাকায়। সমস্যা মিটে যাওয়ায় চলে এলাম। স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেব।