গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
চিকিৎসকমহল ও সরকারি সূত্রের খবর, ১০ তারিখ রাত ১২টা থেকে বা বলা ভালো ১১ তারিখ শুরু হয় জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মঘট। তারপর থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে রাজ্যের এই অন্যতম বড় মেডিক্যাল কলেজে ইমার্জেন্সি এবং আউটডোরের মাধ্যমে ভর্তি হয়েছেন মাত্র ৯৭ জন রোগী। এর মধ্যে ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন এবং তৃতীয় দিন ১২ এবং ১৩ জুন এতবড় একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোনও রোগীই ভর্তি হননি! শুক্রবার ১৪ তারিখ ভর্তি হয়েছেন মাত্র তিনজন! তুমুল সমালোচনা শুরু হওয়ার পর শনিবার ১৫ জুন রোগী ভর্তির সংখ্যা একটু বেড়েছে— তাও নমঃ নমঃ করে হয়েছে ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ১০ জন! চিকিৎসকদের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভের তীব্রতা আরও বাড়ায় রবিবার ছুটির দিনে স্রেফ ইমার্জেন্সির মাধ্যমে রোগী ভর্তি আরও কিছুটা বাড়লেও তা ভদ্রস্থ তিন সংখ্যার ধারেকাছেও ছিল না। ভর্তি হন মাত্র ২৩ জন। ধর্মঘট উঠি, উঠি করছে এমন দিনে অর্থাৎ সোমবার, ১৭ জুন ইমার্জেন্সি ও আউটডোর থেকে রোগী ভর্তি হয়েছেন আরও কিছুটা বেশি, ৪৪ জন। সব মিলিয়ে সাতদিনে ৯৭ জন!
কিন্তু অন্যান্য সাধারণ দিনে কেমন থাকে এই হাসপাতালের অবস্থা, কতজন রোগী ইমার্জেন্সি এবং আউটডোরের মাধ্যমে এখানে ভর্তি হন? হাসপাতালের এক পদস্থ সূত্র জানিয়েছে, এই ঘটনার ঠিক আগের সাতদিন, মানে ৪ জুন থেকে ১০ জুনের পরিসংখ্যান। ৪ জুন ৩০৪ জন, ৫ই ১৪১ জন, ৬ই ২৮৯ জন, ৭ জুন ৩৩১ জন, ৮ই ২৬৪ জন, ৯ জুন রবিবারও ১৩৮ জন এবং ১০ জুন সোমবার, পরিবহ নিগৃহীত হওয়ার আগে পর্যন্ত ৩৪৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এনআরএস-এ। অর্থাৎ, ধর্মঘটের সাতদিন মোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ৯৭ জন আর তার আগের স্বাভাবিক কাজের সাতদিনে ১৮১২ জন। ফারাকটা আসমান জমিনের।
এবার দেখা যাক, অত্যন্ত কর্মব্যস্ত এই মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে রোগী দেখার পরিসংখ্যান। ধর্মঘটের সাতদিন (১০-১৭ জুন) এখানকার আউটডোরে রোগী দেখা হয়েছে যথাক্রমে ১০২, ৩১, ২২, ২৭, ১১, ০ এবং ১৫। অথচ ধর্মঘট শুরু হওয়ার আগের সাতদিন এখানে রোগী দেখা হয়েছে যথাক্রমে ৩৫৫৫, ২১০০, ৩৩৬২, ৪০৫২, ২০৪৫, ০ (রবিবার) এবং ৪৪৩১—মোট ১৯,৫৪৫ জন। বোঝাই যাচ্ছে, গড়পড়তা দৈনিক যেখানে সাড়ে তিন হাজার আউটডোর রোগী দেখা হয়, সেখানে ধর্মঘটের দিনগুলির অবস্থা কী! সাতদিনে মাত্র ২০৮ জন!
ফলে সরকারি রেকর্ডই বলে দিচ্ছে, ইমার্জেন্সি পরিষেবা স্বাভাবিক রাখছি আমরা, ধর্মঘটের দিনগুলিতে জুনিয়র ডাক্তারদের এই দাবি ছিল কতটা অসাড় এবং ভিত্তিহীন। আবার সরকারের কাছেও শিক্ষণীয় যে, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার নির্দেশে অতিরিক্ত স্বাস্থ্যসচিব রাজীব সিনহা এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) ডাঃ প্রদীপ মিত্র সিনিয়র ডাক্তার এবং মেডিক্যাল অফিসারদের প্রতি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া মেলেনি।