বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রাজ্যব্যাপী ছ’দিনের টানা জুনিয়র ডাক্তারদের করমবিরতি এবং তাকে নিঃশর্ত সমর্থন জানিয়ে সিনিয়রদের সিংহভাগ পাশে দাঁড়ানোয় বর্তমানে এই ধর্মঘট কার্যত সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় ধর্মঘটের চেহারা নিয়েছে। এমন একটি অবস্থায় চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের সহকর্মীদের কর্মবিরতির মাঝে তাঁদের অপ্রিয় হতে হবে জেনেও, মরণাপন্ন রোগীদের কেমো দেওয়া চালু রাখলেন সেখানকার মেডিক্যাল অঙ্কোলজির ডাঃ পার্থ নাথ। এভাবে না হলেও চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে নিজের ছোট্ট চেম্বারে রোগী দেখা বন্ধ না করে সমস্ত রোগীর কাছ থেকে সেদিনের ভিজিট নেননি আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসক সমাজেরই অন্যতম প্রতিনিধি ডাঃ শুভেন্দু বাগ।
সিএনসিআই সূত্রের খবর, চিকিৎসক ধর্মঘটের জন্য ক্যান্সারের চিকিৎসার মতো জীবনদায়ী পরিষেবা কার্যত থমকে গিয়েছে রাজ্য ও পূর্ব ভারতের এই সর্ববৃহৎ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্রে। টিকিট বন্ধ, রেডিওথেরাপি বন্ধ, কেমোথেরাপিও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেত, যদি না এখানকার মেডিক্যাল অঙ্কোলজি বিভাগের সিনিয়র চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ পার্থ নাথ ‘ডে কেয়ার’-এ পুরনো রোগীদের কেমো দেওয়ার কাজ চালু রাখতেন। ডাঃ নাথ কি তাহলে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন করেন না? তা না হলে সকলে একদিকে, আর তিনি অন্যদিকে গিয়ে মরণাপন্ন রোগীদের পরিষেবা বজায় রাখলেন ঠিক কোন যুক্তিতে? রবিবার এই প্রশ্ন করা হলে পার্থবাবু বলেন, পরিবহের সঙ্গে যা হয়েছে, তাতে নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। প্রতিটি আক্রমণ নিন্দাজনক। কিন্তু, সেজন্য অন্যান্য হাজারো রোগীর সঙ্গে শত্রুতা কেন? একজন মরণাপন্নকে কেমো না দেওয়া, তাঁর চিকিৎসা চালু না রাখা—এটা কি চিকিৎসকের ধর্ম? সাফ উত্তর পার্থবাবুর।
অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার বালিচকে নিজের চেম্বারে রোগী দেখা বন্ধ না করে, বরং তাঁদের কাছ থেকে ফিজ না নিয়ে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন পিজি হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ শুভেন্দু বাগ। ১১২ জন রোগীর কারও কাছ থেকেই তিনি ফিজ নেননি। রোগী ও পরিজন যখনই ফিজের কথা তুলেছেন, ডাক্তারবাবু জোড়হাত করে বলেছেন, মাফ করবেন! কিন্তু, এমনটা বলছেন কেন ডাক্তারবাবু? অন্য প্রান্ত থেকে এ প্রশ্ন এলেই শুভেন্দুবাবু তাঁদের বুঝিয়েছেন, বর্তমানে কেন ডাক্তারবাবুরা আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁরা তো আর ‘গণশত্রু’ নন। দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে, তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলন নেমেছেন।
এদিন যোগাযোগ করা হলে ডাঃ বাগ বলেন, বহু রোগী ও তাঁদের পরিবারই এই আন্দোলনের জন্য আমাদের ভুল বুঝছেন। আমি ভাবলাম, রোগী দেখেই বরং প্রতিবাদ জানানো হোক। রোগীদের নিয়েই তো আমাদের বড় পরিবার। শনিবার তাঁদের যতটা পারলাম বোঝালাম।