বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পিজি হাসপাতালে কথা হচ্ছিল জয়নগরের আঞ্জু গাজির সঙ্গে। স্বামী সালাম গাজিকে সুপার অফিসের গায়েই মেঝেতে প্লাস্টিক বিছিয়ে শুইয়ে দিয়ে নিজে তার একপাশে বসে আছেন আঞ্জু। বললেন, ওঁর ফুসফুসে ক্যান্সার। কেমো দেওয়ার জন্য নিয়ে এসেছি। গাড়ি-ভাড়া খরচের সীমা-পরিসীমা নেই আমাদের মতো গরিব পরিবারে। সাত নম্বর কেমো চলছে। এদিন কেমো হওয়ার ছিল। ডাক্তারবাবু জানালেন, ধর্মঘট চলছে, এখন আর কেমো হবে না। বলতে পারেন আমরা যাবটা কোথায়? ডাক্তারবাবুদের মারধর করাকে কেউ সমর্থন করতে পারে? কিন্তু, আমরা কী দোষ করলাম? চিকিৎসা না করে আমাদের কেন ফিরিয়ে দিচ্ছেন ওঁরা?
পিজি’রই ঝিলপার লাগোয়া জায়গায় বসে থাকা হাবড়ার অর্চনা গিরি, গৌতম দাস, বসিরহাটের অর্পিতা মান্নাদের সঙ্গে চিকিৎসক নিগ্রহ এবং ডাক্তারদের ধর্মঘট নিয়ে কথা বলতে শুরু করতে না করতে আরও বহু রোগীর বাড়ির লোকজন চলে এলেন। তাঁদের গলায় কমবেশি একসুর— আমাদের কষ্ট বাড়ছে। আমরা গরিব মানুষ। সরকারি হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেলে যাবটা কোথায়? ডাক্তারবাবুরা সেকথা বুঝবেন না? কয়েকজনের জন্য কয়েক লাখ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন কেন?
এখানেই ভর্তি মুর্শিদাবাদের নোয়াবুল শেখ বললেন, মেয়ের বয়স আট মাস। কিডনির অসুখে ভুগছে। ওয়ার্ডে ডাক্তার নেই। মেয়ের যে কী হবে, কে জানে! হাবড়ার বাসিন্দা অনিমেষ সিংও কাতর ভঙ্গিতে বললেন, মাথায় জল জমেছে ছেলের। ডাক্তার নেই। খুবই দুশ্চিন্তা রয়েছি। ওর কিছু হয়ে গেলে আমরা কী নিয়ে বাঁচব? আমাদের একটাই কথা, আপনারা, ডাক্তারবাবুরা আমাদের জীবন-মৃত্যু নিয়ে কাজ করেন। কয়েকজনের জন্য আমাদের শাস্তি দিচ্ছেন কেন? এভাবে দিনের পর দিন যদি প্রিয়জনের কষ্ট দেখে আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে, তখন কি আমাদের দোষ হবে? আপনারা কী বলেন?