কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বৃহস্পতিবার এনআরএস-এর এক নম্বর গেটের মুখে যখন মুহুর্মুহু স্লোগান উঠছে জুনিয়র ডাক্তারদের, সেখান থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে প্রতিদিন ভিড়ে গমগম করতে থাকা ওই এলাকা তখন প্রায় জনশূন্য বলা চলে। এক-আধজন খাচ্ছেন দুপুরের খাওয়া। কিন্তু পরিচিত সেই ব্যস্ততা, হাঁকডাক নেই সেখানে। কথা হচ্ছিল এমনই একটি হোটেলের মালিক শেখ বাবুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০ বছর এখানে হোটেল চালাচ্ছি। কোনওদিন এমনটা দেখিনি। দুর্গাপুজোর ছুটির সময়েও হাসপাতালে শ’য়ে শ’য়ে লোক আমাদের এখানে খেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এই দু’দিনে ৭০-৮০ জনের বেশি খদ্দের আসেননি। এভাবে চললে বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না।
পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা উৎপল দে, গণেশ দে’র পরপর দু’টি পাইস হোটেল। উৎপলবাবু বলেন, এরকম তো মাঝেমাঝেই শুনি যে, ডাক্তারবাবুরা কাজ করছেন না। কিন্তু সেটা কয়েকঘণ্টার জন্য। টানা তিনদিন ধরে এরকম অবস্থা কোনওদিন দেখিনি। যেভাবেই হোক, হাসপাতাল চালু হোক। তা না হলে বহু অসহায় রোগী যেমন না চিকিৎসা পেয়ে মারা যাবে, তেমনি আমাদের এই একমাত্র কাজ হারিয়ে গেলে, আমরাও না খেয়ে মরব। ভিড়ভাট্টা না থাকা হোটেলে দুপুরে খবরের কাগজ নিয়ে ওল্টাচ্ছিলেন গণেশবাবু। তিনি বলেন, এই সামান্য সমস্যা মেটানো যাচ্ছে না কেন, তা বুঝতে পারছি না। তাঁর প্রশ্ন, ডাক্তারদের গায়ে হাত তোলা যেমন ঠিক না, তেমনিই অসহায় রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়াটাও কি ঠিক? তিনি বলেন, প্রতিদিন কত ধরনের মানুষ আমাদের দোকানে আসে। বুঝতে পারি, বেশিরভাগেরই নার্সিংহোমে গিয়ে চিকিৎসা করানোর ক্ষমতা নেই। এভাবে সব বন্ধ হয়ে গেলে তো মৃত্যুমিছিল পড়বে! তাঁর হোটেলের এক কর্মচারী সনাতন মাইতির বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরে। তিনি ব্যাগ গোছাচ্ছিলেন দেশের বাড়ি যাওয়ার জন্য। জানালেন, মালিকই তো বলল, এই অবস্থা না কাটা পর্যন্ত আর থাকার দরকার নেই। তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি। আশা করি, এক-দু’দিনে ফের সব ঠিক হয়ে যাবে। তখন আবার চলে আসব এখানে। হাসপাতালে এই পরিস্থিতির কারণে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের পাশাপাশি উদ্বেগ, আশঙ্কা বাড়ছে তাঁদের মধ্যেও।