কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ নম্বর কাপাসডাঙা এলাকায় বছর দুয়েক ধরে ভাড়া থাকেন রাজ্য সেচ দপ্তরের প্রাক্তন কর্মী শিবসাধন রায় ও তাঁর স্ত্রী রাধারানি রায়। শিবসাধনবাবুর তিন মেয়ে ও এক ছেলে। ছেলে রাজীব রায় কর্মসূত্রে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে থাকে। বাবা-মায়ের কথা অমান্য করে রাজীব এক বিবাহিত মহিলাকে বিয়ে করে সেখানেই সংসার পেতেছে। কর্মসূত্রে একসময়ে নিজেও জঙ্গিপুরে থাকতেন শিবসাধনবাবু। তাই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জঙ্গিপুর শাখাতেই পেনশন অ্যাকাউন্ট তাঁর। বর্তমানে ২৭ হাজার টাকা পেনশন শিবসাধনবাবুর। ঋণ ও বিমার টাকা কেটে তিনি ২১ হাজার টাকা হাতে পান।
শুক্রবার জঙ্গিপুরে পেনশনের টাকা তুলতে যান ওই বৃদ্ধ। ব্যাঙ্কে ঢোকার মুখে দেখেন ছেলে রাজীব বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। টাকা তোলার পর রাজীব বাবাকে একটি হোটেলে ভাত খাওয়াতে নিয়ে যায়। পরে বাবার সঙ্গে রাজীবও ট্রেন ধরে রাত দেড়টা নাগাদ কাপাসডাঙায় বাবা-মায়ের ভাড়া বাড়িতে চলে আসেন। ততক্ষণ বাবার টাকার ব্যাগ তার হেফাজতেই ছিল। পরের দিন রাতে রাজীব দু’পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত অসুস্থ মাকে দেখিয়ে মায়ের ব্যাগের মধ্যে জাল নোটগুলি ভরে দেয়। রাধারানিদেবী বলেন, ছেলে আমাকে বলেছিল তোমাদের জন্য একটা টিভি কিনতে হবে। আমি কাল সকালে বেরিয়ে গিয়ে আবার চলে আসব। আমি আসার আগে বাবার এই পেনশনের টাকায় হাত দেবে না।
রাধারানিদেবী বিছানায় বসে বসেই সেই টাকা থেকে কাজের মাসি, বাড়ি ভাড়ার টাকা প্রভৃতি আলাদা করে গার্ডার দিয়ে বেঁধে রাখেন। রবিবার রাজীব সারা বছরের পেনশন তোলার জন্য বাবার বারোটি ব্ল্যাঙ্ক চেকও নিয়ে যায়। কিন্তু রবিবার থেকে ছেলে আর বাড়ি ফেরেনি। রাধারানিদেবী বলেন, বুধবার সকালে বাড়িতে আসা যুবককে মিনারেল ওয়াটারের টাকা দিতে গেলেই পাঁচশো টাকার নোটটি জাল বলে জানান সেই যুবক। তারপর ব্যাগে থাকা অন্য নোট বের করে দিলে সেটিও জাল বলে জানায় ওই যুবক। এরপর পড়শিরা এলে দেখা যায় বাড়ি ভাড়ার জন্য আলাদা করে রাখা টাকা, মুদিখানার টাকা, পরিচারিকার টাকা সব জাল নোট।
ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। অন্যদিকে বৃদ্ধ দম্পতি সমস্ত টাকা ছেলে ঠকিয়ে নিয়ে চলে যাওয়ায় চরম সমস্যায় পড়েছেন। শিবসাধনবাবু বলেন, আমার মতো এরকম সন্তান যেন কারোর ঘরে না জন্মায়। এই অবস্থায় অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে সারাটা মাস কীভাবে চালাব, তা বুঝতে পারছি না। তাছাড়া এতগুলো জাল নোট রাজীব কোথা থেকে পেল তাও বুঝতে পারছি না!