গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
জেলা তৃণমূলের সভাপতি (গ্রামীণ) পুলক রায় অবশ্য বলেন, বিজেপির ভোট বেড়ে আমাদের ভোট কেন কমল, তা আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি। আমাদের কোনও ত্রুটি থাকলে, তা সংশোধন করে নেব। তবে বিজেপি যেভাবে টাকা ছড়িয়ে ভোট করেছে, তা গোটা রাজ্যের মানুষ দেখেছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক বলেছেন, গোটা এলাকায় তৃণমূল ব্যাপক সন্ত্রাস করেছিল। তা সত্ত্বেও মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন। সম্পূর্ণ অবাধ ভোট হলে আমাদের জয় নিশ্চিত ছিল। কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র বলেছেন, বিজেপির মতো টাকা আমাদের ছিল না। তা সত্ত্বেও গত উপনির্বাচনের চেয়ে আমাদের ভোট বেড়েছে। কিন্তু তৃণমূল এবং বিজেপি যেভাবে টাকা ছড়িয়েছে, তাতে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেছেন, ধর্মীয় মেরুকরণে ভোট হয়েছে। আমরা পর্যালোচনা করছি।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের চেয়ে গত বছর জানুয়ারি মাসে হওয়া উলুবেড়িয়া লোকসভার উপনির্বাচনে সিপিএমের প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার ভোট কমে গিয়েছিল। সেই ভোট গিয়েছিল বিজেপির দিকে। গত বছর সিপিএম পেয়েছিল ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৭৯২টি ভোট। সিপিএমের রক্তক্ষরণ এবারও বজায় রয়েছে। এবার সিপিএম সাতটি বিধানসভা মিলিয়ে ভোট পেয়েছে মাত্র ৮১ হাজার ৩১৪টি। তবে উল্লেখযোগ্যভাবে তৃণমূলের ভোটও অনেকটা কমেছে, আর তা গিয়েছে বিজেপির বাক্সে। তৃণমূল গত উপনির্বাচনে পেয়েছিল ৭ লক্ষ ৬৭ হাজার ২১৯টি ভোট। কিন্তু এবার তা কমে হয়েছে ৬ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯৪৫টি ভোট। অন্যদিকে, গত উপনির্বাচনে বিজেপির ভোট ছিল ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ১৮ ভোট, এবার তা বেড়ে হয়েছে ৪ লক্ষ ৭৯ হাজার ৫৮৬টি ভোট। বরং এই বাজারেও কংগ্রেসের ভোট উপনির্বাচনের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর কংগ্রেস এই লোকসভা থেকে পেয়েছিল ২৩ হাজার ১০৮টি ভোট, এবার তা বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার ৫৬৮টি ভোট। গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় এক লক্ষ ভোটার বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ বিজেপি নতুন ভোটারদের একটি বড় অংশের ভোট নিজেদের দিকে আনতে পেরেছে।
গত বিধানসভায় উদয়নারায়ণপুরে ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৫২৩, আমতায় ৮৩ হাজার ৪৮৪, বাগনানে ৮৫ হাজার ৬৭১ এবং শ্যামপুরে ৭১ হাজার ৭৩৫ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। এবার সেখানে তৃণমূল উদয়নারায়ণপুরে ৩৯ হাজারের কিছু বেশি, আমতায় ৩৮ হাজারের কিছু বেশি, শ্যামপুরে ৩১ হাজারের কিছু বেশি ও বাগনানে ৪৯ হাজারের কিছু বেশি ভোটের লিড পেয়েছে। অর্থাৎ তৃণমূলের ভোট ব্যাপকহারে বিজেপির দিকে গিয়েছে। এক সময়ের বামদূর্গ বলে পরিচিত উলুবেড়িয়ায় যে লাল পার্টি কার্যত সাইন বোর্ডে পরিণত হয়েছে, তাও এবারের ফলাফলেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। রাজনতিকমহল মনে করছে, স্থানীয় কিছু নেতার দাম্ভিকতা, রাতারাতি জীবনযাত্রার বদল এবং মানুষের সঙ্গে দূরত্ব তৈরিই এর প্রধান কারণ।