বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বাস্তবিকই গণনার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যায় যখন সর্বশেষ ফল জানতে পারলেন মিমি, তখন তাঁর চোখমুখ খুশিতে ডগমগ। তিনি তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির অনুপম হাজরার চেয়ে প্রায় ২ লাখ ৯৩ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। মিমি পেয়েছেন প্রায় ৬ লাখ ৮৭ হাজার ৭৭৩ ভোট। প্রায় ৪৭.৯৩ শতাংশের অধিক। অনুপম পেয়েছেন ৩ লাখ ৯২ হাজার ৬১০। প্রায় ২৭. ৩৭ শতাংশের বেশি। উল্লেখ্য, বিগত লোকসভায় সুগত বসুর পাওয়া ভোটের চেয়ে মিমি এবার এক লাখ বেশি পেয়েছেন। সেখানে সিপিএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য পেয়েছেন ৩ লাখ ১ হাজার ৫৬০টি ভোট। প্রায় ২১.২ শতাংশের বেশি।
যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র ধারাবাহিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে রয়েছে। বাম আমলেই এই কেন্দ্র থেকে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদে গিয়েছিলেন। তার পরবর্তী সময়ে কবির সুমন, সুগত বসু তৃণমূলের প্রতীকে জিতেছেন। তবে প্রতিবার দলীয় স্তরে যাদবপুরের কোনও ভূমিপুত্রকে প্রার্থী না করার জন্য ক্ষোভ থেকেই গিয়েছে। এবার ভোটাররাও দলের অনেকে চেয়েছিলেন স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করা হোক। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেই ঝুঁকি নিতে চায়নি। কারণ, অন্তর্কলহে সব জায়গা জেরবার ছিল। সাবোতাজ হওয়ার আশঙ্কাও ছিল। সেই কথা ভেবেই নবাগতা হলেও রুপোলি পর্দার অভিনেত্রী মিমিকে প্রার্থী করিয়ে আমজনতাকে এক জায়গাতে টেনে আনার কৌশল নিয়েছিল। পাশাপাশি দলের সমস্ত গোষ্ঠীকে মিমির হয়ে কাজে নামার ব্যাপারে এক জায়গাতে টেনে আনার উদ্যোগ নিয়েছিল। তাতে পুরোপুরি সফল হয়েছে তৃণমূল। মিমির গ্ল্যামারকে মানুষ বেশি গ্রহণ করেছে। যদিও নির্বাচন ঘোষণার পর সিপিএম থেকে হেভিওয়েট প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে দাঁড় করানো ও কংগ্রেস ময়দান থেকে সরে যাওয়াতে অনেকেই ভেবেছিল, তৃণমূলের জেতা সহজ হবে না। লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হবেই।
ফলে যাদবপুরের ফল কী হবে তা নিয়ে সংশয় ও জল্পনা হয়েছে। তুলনায় বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা বহিরাগত হিসেবে প্রথম দিকে চমক দিলেও ভোট প্রচারের সময় অনুব্রতর বাড়িতে ভুরিভোজন বিতর্কে একেবোরে অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবে এই কেন্দ্রে লড়াই চলছিল তৃণমূল ও সিপিএমের সঙ্গে। কিন্তু এদিন ফল বেরবার পর দেখা গেল, বিগত লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম যেখানে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এবার সেই জায়গা দখল করেছে বিজেপি। পদ্মফুল ভোটের হার অনেকটাই বাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে। তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে সিপিএম। শুধু তাই নয়, বিগত লোকসভায় প্রাপ্ত ভোটের চেয়ে অনেক কম পেয়েছে কাস্তে হাতুড়ি। এদিন রাতে কসবায় মিমি চক্রবর্তী সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, এই জয় দলের মানুষ ও ভোটারদের উৎসর্গ করলাম। কারণ, আমজনতা ও দলের সর্বস্তরের মানুষ পাশে না থাকলে এত বড় জয় হত না।