কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
এবারের নির্বাচনে টিনসেল টাউনের প্রার্থীদের মধ্যে যে দু’জনের নাম সবচেয়ে বেশি সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, তাঁরা হলেন যাদবপুরের মিমি চক্রবর্তী ও বসিরহাটের নুসরত জাহান। দু’জনেই শেষ পর্যন্ত রাজ্যের শাসকদলের সম্মান বজায় রাখতে পেরেছেন। হেলায় পর্যুদস্ত করেছেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীদের।
এবার যাদবপুর কেন্দ্রে ছিল ত্রিমুখী লড়াই। তৃণমূল প্রার্থী মিমির লড়াই ছিল দুঁদে রাজনীতিক সিপিএমের বিকাশ ভট্টাচার্য ও তৃণমূল থেকে বিজেপিতে নাম লেখানো অনুপম হাজরার বিরুদ্ধে। গতবার এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সুগত বসু সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে লক্ষাধিক ভোটে পরাস্ত করেছিলেন। সেই ধারা বজায় রেখে মিমি এবারও দলকে জেতালেন এই কেন্দ্রে।
বসিরহাট কেন্দ্রে নুসরতের মূল টক্কর হয় বিজেপি প্রার্থী সায়ন্তন বসুর সঙ্গে। ২০১৪ সালেও এই কেন্দ্রটি তৃণমূলের দখলে ছিল। সেবার ইদ্রিশ আলি লক্ষাধিক ভোটে পরাজিত করেছিলেন সিপিআইয়ের নুরুল হুদাকে। তবে, এবার নুসরত বিরাট ব্যবধানে জয় পেয়েছেন বসিরহাট থেকে।
তারকা প্রার্থীদের জয়ের তালিকায় এবার সবচেয়ে বড় চমক হুগলি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূলের দু’বারের এমপি রত্না দে নাগকে পরাজিত করেছেন। যা কার্যত ইন্দ্রপতন। গতবারের নির্বাচনেও রত্না দে নাগ সিপিএমের প্রদীপ সাহাকে প্রায় দু’লক্ষ ভোটে হারিয়েছিলেন। সেই কেন্দ্রে লকেটের এই জয় বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
দ্বিতীয়বারের জন্য আবার সংসদ ভবনে পৌঁছে গেলেন বাংলা ছবির হার্টথ্রব দেব (দীপক অধিকারী)। ঘাটাল কেন্দ্রে রাজ্যের শাসকদলের এই প্রার্থীর গতবারের লড়াইটা যতটা অনায়াস ছিল, এবার কিন্তু পথটা ততটা মসৃণ ছিল না। তাঁকে এবার লড়তে হয়েছে প্রাক্তন আইপিএস তথা বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে। ভোটের দিন ব্যাপক গণ্ডগোলও হয় এই কেন্দ্রের কেশপুরে। এত কিছুর পরও ঘাটালের মানুষের আশীর্বাদের হাত উঠেছে দেবের মাথাতেই।
এমপি হিসেবে হ্যাটট্রিক করলেন শতাব্দী রায়। বীরভূম কেন্দ্র থেকে তাঁর জয়ের ধারা অব্যাহত। এবার তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপির দুধকুমার মণ্ডল। জয়ের পর শতাব্দী বলেন, ‘বীরভূমের মানুষ আরও একবার কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। তার জন্য ধন্যবাদ। এখানকার মানুষ জোড়া ফুল চিহ্ন ও আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রেখেছেন। দলের সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য আমাদের জেলার নেতা অনুব্রত মণ্ডলেরও।’
একমাত্র আসানসোল কেন্দ্রেই ছিল তারকা বনাম তারকার লড়াই। এই কেন্দ্রে গতবার বিজেপির টিকিটে জিতে গায়ক বাবুল সুপ্রিয় কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রীও হয়েছিলেন। বুথফেরত সমীক্ষায় আশঙ্কা করা হয়েছিল, এই আসনটি বিজেপির হাতছাড়া হতে পারে। কিন্তু সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে তৃণমূলের সেলিব্রিটি প্রার্থী মুনমুন সেনকে পরাস্ত করে নিজের দুর্গ অটুট রাখলেন বাবুল সুপ্রিয়। ২০১৪ সালে বাঁকুড়া কেন্দ্রে দুঁদে রাজনীতিবিদ সিপিএমের বাসুদেব আচারিয়াকে হারিয়ে জায়েন্ট কিলার হয়েছিলেন সুচিত্রা-কন্যা। কিন্তু এবার আসানসোলে শেষরক্ষা হল না। নিজের জয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে রবি ঠাকুরের ‘চিত্ত যেথা ভয় শূন্য’ কবিতাটিকে উদ্ধৃত করে বাবুল বলেন, ‘আমাকে হারানোর জন্য এখানে বুথ দখল হয়েছে, রিগিং হয়েছে। তাই ৮১টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছিলাম। কিন্তু আসানসোলের মানুষের আশীর্বাদ আমার দিকেই ছিল। তাই মাথা উঁচু করে জিতেছি।’
টলিউডের এই জয়জয়কার মধ্যেও ‘হীরক-জয়ন্তী’, ‘মিলনতিথি’ খ্যাত নায়ক তথা বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায় পরাজিত হয়েছেন উলুবেড়িয়া কেন্দ্রে। ওই কেন্দ্রে জয়লাভ করেছেন তৃণমূলের সাজদা আহমেদ।