কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ঘড়িতে তখন বেলা ১২টা। ডালহৌসি চত্বরে রাস্তা, ফুটপাত কার্যত ফাঁকা। রাস্তার দু’পাশের দোকানগুলি খোলা থাকলেও, লোকজনের দেখা নেই। মহাকরণ থেকে রাজভবন পর্যন্ত একাধিক সিগন্যাল থাকলেও, এদিন একটি থেকে খুব বেশি হলে দু’টি সিগন্যালে থামতে হয়েছে বাসকে। বলছিলেন এক সরকারি বাসের চালক। একই অবস্থা ধর্মতলা চত্বরেও। রাস্তায় লোকজনের তেমন দেখা মেলেনি। গাড়ির চাপ অনেকটাই কম ছিল পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্টেও। মেট্রো রেল অনেকটাই ফাঁকা ছিল। উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতায় একই ছবি ধরা পড়েছে। উল্টোডাঙায় কথা হচ্ছিল কয়েকজন দোকানদারের সঙ্গে। তাঁদের বক্তব্য, হঠাৎ করে কেউ শহরে এলে ধর্মঘট চলছে মনে করবেন। রাস্তায় লোক কোথায়? বিকেলের পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। দিনে কিছু যানবাহন দেখা গেলেও, সন্ধ্যার পর তার একটা বড় অংশই উধাও হয়ে যায়। ফলে গন্তব্যে পৌঁছতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। সেই সময় বেশি ভাড়ায় দাপিয়ে ছুটেছে কিছু শাটল গাড়ি।
এদিন যানবাহনের সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়ে বাস-ট্যাক্সির মালিকরা মূলত তিনটি কারণের কথা বলছেন। প্রথমত, ভোট গণনা এবং ফল প্রকাশকে কেন্দ্র করে অশান্তির আশঙ্কায় চালকদের একটা বড় অংশ এদিন বাস-ট্যাক্সি নিয়ে রাস্তায় নামেননি। দ্বিতীয়ত, মালিকরাও একই কারণে যানবাহন রাস্তায় নামাতে তেমন উৎসাহ দেখাননি। তৃতীয়ত, শ্রমিকদের একটা অংশ নির্বাচনের ফল নিয়ে এতটাই কৌতূহলী যে, এদিন তাঁদের অনেকেই হয় গণনা কেন্দ্রের কাছে বা টিভির সামনে ভিড় করেছিলেন। পাশাপাশি পুলিস নির্বাচনের জন্য যে বাসগুলি নিয়েছিল, তার অনেকগুলি এখনও ‘রিলিজ’ না হওয়ায় তারও প্রভাব পড়েছে রাস্তায়।
জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আসলে গণনাকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলের আশঙ্কায় বাসকর্মীদের অনেকেই এদিন কাজে যোগ দেননি। তার উপর অনেক কর্মী আবার ফল নিয়ে উৎসাহের জেরে চোখ রেখেছিলেন টিভির পর্দায়। রাস্তায় তেমন লোক ছিল না।
অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, কর্মীদের সংখ্যা তো এদিন কম ছিলই, তার উপর ভোটের জন্য পুলিসের নেওয়া বাস এখনও ‘রিলিজ’ হয়নি। সব মিলিয়ে ‘ধর্মঘট’-এর ছবি দেখা গিয়েছে। একই কথা বলেছেন মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বোসও।
এদিন বাসের মতোই ট্যাক্সির সংখ্যা ছিল খুব কম। তার সুযোগ নিয়ে কয়েকজন ট্যাক্সিচালক বেশি দর হেঁকেছেন। বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিমল গুহ বলেন, এসব করা একেবারেই উচিত হয়নি।
বিভিন্ন অ্যাপ নির্ভর লাক্সারি ট্যাক্সির সংস্থায় গাড়ি দিয়েছেন লাক্সারি ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন (পশ্চিমবঙ্গ)-এর বহু সদস্য। সংগঠনের সম্পাদক সৈকত পাল বলেন, মূলত গণ্ডগোলের আশঙ্কায় চালক-মালিকরা গাড়ি নামাতে চাননি। তবে, রাস্তায় লোকজনও ছিল খুব কম। তাই, গাড়ির চাহিদা তেমন না থাকায় সার্জ প্রাইসও তেমন বাড়েনি।