গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
প্রেসিডেন্সির নিয়ম অনুযায়ী ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ হাজিরা থাকা বাধ্যতামূলক। এই ১০৩ জনের সেই হাজিরা নেই। এঁদের মধ্যে ৭৭ জনই প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। বাকিরা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের। কিন্তু বার বার বলা সত্ত্বেও হাজিরার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো যাচ্ছে না কেন? পড়ুয়াদের যুক্তি, সিবিসিএস পদ্ধতিতে যেখানে ৬০ শতাংশ হাজিরা থাকলেই পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার কথা, সেখানে প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ সেই ছাড়পত্র পাওয়ার মাপকাঠি অনেকটাই উঁচুতে রেখেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে তা ৭৫ শতাংশ। এক ছাত্র বলেন, মাত্র তিন শতাংশ হাজিরা কম থাকায় তিনি পরীক্ষায় বসতে পারছেন না। অনেক শিক্ষকই সঠিকভাবে হাজিরার হিসেব তোলেন না বলে পড়ুয়াদের অভিযোগ। কেউ কেউ ক্লাসরুমের ছবি তুলে নিয়ে যান এই বলে যে, পরে সেটা দেখে সময়মতো হাজিরা বসিয়ে নেবেন। কিন্তু সেটা আদৌ হচ্ছে কি না, তার খবর পাওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে অন্য কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেলেও সেক্ষেত্রে হাজিরা দেওয়া হয় না বলে পড়ুয়াদের অভিযোগ। এমনকী, ক্লাস করেও হাজিরা পাননি, এমন পড়ুয়াও নাকি রয়েছেন।
এবার সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমা দেওয়া পড়ুয়ারা। কর্তৃপক্ষের ধারণা, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভুয়ো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। কামাই করার তারিখের সঙ্গে অসুস্থ হওয়ার তারিখ মেলেনি। আবার কেউ কেউ এত জটিল অসুস্থতার কারণ দেখিয়েছেন যে, তাঁদের চেহারায় সেই ছাপ পাওয়া যায়নি। ভুয়ো সার্টিফিকেটের বিপক্ষে ফেসবুকে সোচ্চার হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রবীণ অধ্যাপক। তিনি পড়ুয়া এবং চিকিৎসক, দু’পক্ষকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন। পক্ষে-বিপক্ষে মতামতের ঝড় উঠে যায় তাঁর কমেন্ট বক্সে।
মঙ্গলবার এই পড়ুয়াদের ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। অসুস্থতা এবং অন্যান্য কারণে ছুটি নিলে কেন তা গ্রাহ্য হবে না, এই প্রশ্নের উত্তরে পরীক্ষা নিয়ামক নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত কিছুটা নমনীয় হয়েছিলেন বলে ছাত্রছাত্রীদের দাবি। তাঁর সঙ্গে এদিন দেখা করে প্রকৃত কারণ দর্শিয়ে আবেদন করতে বলেছিলেন। এদিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ ছাত্রছাত্রীরা পোর্টিকোয় জমায়েত করেন। তার পরে পরীক্ষা নিয়ামকের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু তারপরেও কোনও সমাধানসূত্র বের হয়নি বলেই জানিয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। পরীক্ষা নিয়ামক নীলাঞ্জন দাশগুপ্তকে ফোন করা হলে, তা বন্ধ পাওয়া যায়। কর্তৃপক্ষের কেউই আপাতত এটা নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি। তবে, একটা কথা অনেকেই বলছেন, প্রেসিডেন্সির মতো নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের থেকেই যদি এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়, তাহলে তা মফস্সলের কলেজে কলেজে ছড়িয়ে পড়লে অস্বাভাবিক কী? যদিও, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই সাফ জানিয়েছেন, হাজিরা নিয়ে পিছু হটার কোনও সম্ভাবনা নেই। পড়ুয়াদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে, এটা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।