কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
যোগাশ্রম পাড়ার বাসিন্দা সুকান্ত দে ও কৃষ্ণা দের একমাত্র সন্তান সুকল্প। সুকান্তবাবু ব্যান্ডেলে ব্যবসা করেন। মা কৃষ্ণাদেবী গৃহবধূ। ব্যবসার কারণে সুকান্তবাবু ছেলেকে খুব একটা সময় দিতে না পারলেও কৃষ্ণাদেবী পুরো সাহায্য করতেন। সুকল্প বাংলায় ৯৬, ইংরেজি, গণিত ৯৯, জীবন বিজ্ঞান ৯৯, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৯, ভূগোলে ১০০ ও ইতিহাসে ৯৪ নম্বর পেয়েছে। সুকল্প জানায়, সে কোনও বাঁধাধরা নিয়ম বা সময় মেনে পড়াশোনা করেনি। গণিত ও ইতিহাস এই দুটি বিষয় আমার সবথেকে ভালো লাগে। কিন্তু প্রিয় বিষয় ইতিহাসে আরও একটু বেশি নম্বর আশা করেছিলাম। অবসর সময়ে ফুটবল খেলা দেখতে ও দাবা খেলতে ভালো লাগে।
কৃষ্ণাদেবী বলেন, ছোটবেলা থেকেই ছেলে পড়াশোনায় ভালো ছিল। মাধ্যমিকেও ভাল ফল করবে বলে আশাবাদী ছিলাম। তাই পর্ষদের তরফে ফল ঘোষণা দেখছিলাম। ওই সময়েই জানতে পারি ছেলে মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। তারপর থেকে প্রচুর মানুষ ওকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কৃষ্ণাদেবী বলেন, ছেলে নিজেই তার জেদে পড়াশোনা করেছে। আমি শুধু সবসময় ওর পাশে বন্ধুর মতো থাকার চেষ্টা করেছি। আগামী দিনেও যাতে ও ভালো ফল করতে পারেই সেটাই ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি। সুকল্প পঞ্চম হওয়ার খবর পাওয়ার কিছুক্ষণ বাদেই স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার তার বাড়িতে হাজির হন। ফুলের তোড়া ও মিষ্টি দিয়ে আগামী দিনে সুকল্পের আরও সাফল্য কামনা করেন।
অন্যদিকে, ৬৮১ নম্বর পেয়ে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রকাশিত মেধা তালিকায় দশম স্থানে রয়েছে ধনিয়াখালি মহামায়া বিদ্যামন্দিরের ছাত্র সৌম্যদীপ দত্ত। শাড়ির ব্যবসায়ীর ছেলে সৌম্যদীপ ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবায় কাজ করতে চায় সে। সৌম্যদীপ জানায়, পরীক্ষা দেওয়ার পর ভালো ফল হবে বলে আশা করেছিলাম। তবে রাজ্যে দশম স্থান অধিকার করতে পারব তা ভাবিনি। সৌম্যদীপ জানায়, অবসর সময়ে ক্রিকেট খেলা দেখতে ও খেলতে ভালো লাগে । এছাড়াও গল্পের বই পড়ি। বাবা-মা ও শিক্ষক-শিক্ষিকার সহায়তা ছাড়া আমার এই ফলাফল সম্ভব হতো না।
জয়কৃষ্ণবাটির বাসিন্দা সৌম্যদীপের বাবা দুলালচন্দ্র দত্ত তাঁতের শাড়ির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। মা লীনা দত্ত গৃহবধূ। তাঁদের একমাত্র ছেলে সৌম্যদীপ। লীনাদেবী বলেন, ছোট থেকেই ছেলে মেধাবী ছিল। স্কুলে সব সময় প্রথম হত। লীনাদেবী বলেন, ব্যবসা চালিয়ে মোটামুটি চলছিল। ২০১৫ সালে দুর্ঘটনায় স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারপর থেকেই আর্থিক অনটনের মধ্যে আমাদের কঠিন লড়াই শুরু হয়। সৌম্যদীপের বাবা এখনও অসুস্থ। চিকিৎসকরা ব্রেনের অপারেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু, আর্থিক সমস্যার কারণে অপারেশন করাতে পারছি না। আমাদের যাই হোক না কেন ছেলে যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে আমরা তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাব। সৌম্যদীপ রাজ্যে দশম স্থান অধিকার করেছে জানার পরেই তাকে অভিনন্দন জানাতে বাড়িতে হাজির হন রাজ্যের মন্ত্রী তথা ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র। ফুল, মিষ্টি দিয়ে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি আগামী দিন পড়াশোনা করতে কোন রকম সমস্যা হলে তিনি সৌম্যদীপের পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দেন।