কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
এটা শুধু বেলেঘাটার একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বিচ্ছিন্ন ছবি নয়। কাশীপুর, বেলগাছিয়া, এন্টালি সহ এই লোকসভার কেন্দ্রের বিভিন্ন বুথ ঘুরে একই ছবি দেখা গিয়েছে। অধিকাংশ বুথে প্রধান তিন বিরোধী দল- সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি-র পোলিং এজেন্টদের দেখা যায়নি। তৃণমূল ও নির্দল প্রার্থীদের এজেন্টদের শুধু দেখা গিয়েছে অধিকাংশ বুথে। পোলিং এজেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে সিপিএমের থেকেও খারাপ হাল ছিল বিজেপির। জোড়াসাঁকো বিধানসভা এলাকার কিছু বুথ ছাড়া সারাদিন ধরে বহু বুথ ঘুরে কোনও বিজেপি এজেন্ট পাওয়া যায়নি।
ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে রাজনৈতিক দলের অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস খোলার ক্ষেত্রে এখন অনেক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে নির্বাচন কমিশন। তা সত্ত্বেও ক্যাম্প অফিস খোলার ক্ষেত্রে তিন বিরোধী পক্ষের থেকে শত যোজন এগিয়ে ছিল তৃণমূল। বিরোধীদের ক্যাম্প অফিসও বিশেষ চোখে পড়েনি।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপের মধ্যে উত্তর কলকাতায় ভোট হয়েছে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের নিরাপত্তার পুরো দায়িত্বে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। কলকাতা পুলিসের এক-দুজন হোমগার্ড শুধু কোনও কোনও ভোট কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্যকারী হিসেবে হাজির ছিল। ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ও তার আশপাশে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সক্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। সিআরপিএফ, আইটিবিপি, বিএসএফ প্রভৃতি কেন্দ্রীয় বাহিনীর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রধারী জওয়ান সচিত্র পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে তবেই ভোটারদের ভিতরে ঢুকতে দিয়েছেন। কাশীপুর রোডের প্রেসিং কোম্পানির গোডাউনের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সামনে দেখা গেল, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা রাস্তার উপর লাইন যাতে ঠিকঠাক থাকে তা দেখভাল করছেন।
কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে সকাল থেকে ভোটাররা উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিয়েছেন। ভোর থেকে লম্বা লাইন পড়ে যায়। ট্যাংরা, বেলেঘাটা এলাকায় দুপুরে চড়া রোদের মধ্যেও ভোটদাতাদের লাইন চোখে পড়েছে। তবে অনেক বুথে ইভিএম গোলমালের জন্য ভোট শুরু হতে দেরি হওয়ার কারণে ভোটারদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। রাজাবাজার এলাকায় ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনের একটি বুথে প্রায় দুই ঘন্টা পরে ভোটগ্রহণ শুরু হয় বলে অভিযোগ করেন ভোটাররা। কোন কোনও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে অব্যবস্থাও দেখা গিয়েছে। বি টি রোডে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবনে অনেকগুলি বুথ করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানের বুথের নম্বরগুলি একটি সাদা কাপড়ের উপর যেভাবে অস্পষ্টভাবে লেখা হয়েছিল, তাতে ভোটাররা বুঝতে না পরে উদভ্রান্ত হয়ে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছিলেন। ভিতরে বুথের ঘরের সামনেও লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে প্রচণ্ড গরমে ভোটাররা রীতিমতো হাঁসফাঁস করছেন।
বড় কোনও অশান্তি কলকাতা উত্তর কেন্দ্রে হয়নি। রবীন্দ্র সরণীর উপর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কাছে বোমা পড়ে। কয়েকদিন আগে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর রোড শো’কে কেন্দ্র করে বিধান সরণীর উপর বিদ্যাসাগর কলেজে যেখানে ব্যাপক গোলমাল হয়, এদিন সেখানেও উত্তেজনা তৈরি হয় অন্য কারণে। ওই কলেজের প্রায় পাশেই আর্য কন্যা মহাবিদ্যালয়ের বুথে ভোট দিতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে আসার পর তিনি সেখানে তৃণমূল সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলার সাধনা বসু সেখানে ছিলেন। বিজেপি নেতা কেন ভোট চলাকালীন বুথের বাইরে টিভি ক্যামেরার সামনে লম্বা বিবৃতি দিচ্ছেন, এটাই ছিল মূল অভিযোগ। এতে ভোটারদের অসুবিধা হচ্ছে। বিক্ষোভ চলার সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তৃণমূল সমর্থকদের দিয়ে এগিয়ে যান। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা বিক্ষোভকারীদের আটকে মন্ত্রীকে গাড়িতে তুলে দেন। বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহা পার্কসার্কাসের চার নম্বর ব্রিজের কাছে আম্বেদকর স্কুলের বুথে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। সিপিএম প্রার্থী বেলগাছিয়া রোডে কিছু সময় অবস্থানে বসেন পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগে। ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশেনের বুথেও এজেন্টকে বসাতে গিয়ে প্রার্থীর আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করেছে সিপিএম।