পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
তাঁকে ৯৩ বছরের তরুণ বলা যায়। শরীর ঋজু। স্মৃতিশক্তি সতেজ। শ্রবণশক্তি একটু ফিকে হয়নি। গলার স্বরে দৃপ্ত ভঙ্গি। ব্রিটিশ আর্মির হয়ে একসময় পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি সহ ভারত-পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়েছেন। দেশের রাজনৈতিক নেতাদের আত্মত্যাগের অজস্র স্মৃতি তাঁর মানসপটে ভিড় করে রয়েছে। খুব কাছ থেকে দেখেছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, কংগ্রেস ও কমিউনিস্টের প্রথিতযশা নেতাদের। তাঁর দাদা ঢাকা মেডিকেল কলেজের কৃতী ছাত্রকে ইংরেজরা ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল। গর্ব করে বলেন, এখন যে ঘরে তিনি থাকেন সল্টলেকের সেই ঘরের প্রথম বাসিন্দা ছিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখর। কংগ্রেস নেতা অতুল্য ঘোষের চিঠি পেয়ে তিনি নতুন তৈরি হওয়া ওই ঘর ১৯৭১ সালে তরুণ নেতা চন্দ্রশেখরকে থাকার জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেই তিনি দেশে প্রথম সাধারণ নির্বাচনে গাড়ি করে গিয়ে উৎসাহ নিয়ে ভোট দিয়েছিলেন অসমের ডিগবয় থেকে। সল্টলেকের বিদ্যাসাগর আবাসনের এই বাসিন্দা জানালেন, তিনি যখন সল্টলেকে আসেন তখন শোনা যেত শেয়ালের ডাক।
বিধাননগর পুলিস, সল্টলেকের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নিয়মিত অতিথি রতীশরঞ্জনবাবু জানান, এই বিদ্যাসাগর আবাসন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর কলেজের শিক্ষকরা। কয়েক দিন আগে ভোট প্রচারকে ঘিরে বিদ্যাসাগর কলেজে মূর্তি ভাঙার ঘটনাতে তিনি ব্যথিত। বললেন, কোনও বাঙালি বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙবে একথা বিশ্বাস করতে পারি না। তখন স্বর্ণযুগ, সব ভালো ছিল, এখন সব খারাপ, এই ধারণায় তিনি বিশ্বাসী নন। তবে তিনি চান, নেতাদের মধ্যে সুষ্ঠু সংস্কৃতি বোধ গড়ে উঠুক। বললেন, দেশের স্বার্থ সবার আগে এটা নেতাদের বুঝতে হবে। জানালেন, শুনেছি যদি কোনও প্রবীণ ভোটার চান তাঁকে গাড়ি করে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবে প্রশাস। জানালেন, আমি ভোট শুরু হওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে গিয়ে লাইনে দাঁড়াব। এরপর খানিকটা স্বগতোক্তির ঢঙে বললেন, ভোটের লাইনে দাঁড়ালে আমি কিছুক্ষণের জন্য সদ্য স্বাধীন দেশে ভোট দেওয়ার দিনকে ফিরে পাই। আমার সঙ্গে লাইন দিয়ে থাকা মানুষগুলো আমার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দিলেও সবাই দেশ গড়তে ভোট দেবেন এই একাত্ম বোধ অনুভব করি।