উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
কিন্তু, সন্ধ্যা হলেই তারকের মদের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়তেন। তখন মদ না পেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন। এই সুযোগ নিয়েছিল জ্যোতি। তার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে ওই বাড়িতেই মদের আসর বসাত জ্যোতি। সেখানে সে মাঝেমধ্যে নিজেও অংশ নিত। তারককে মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে দিয়ে বিভিন্ন সময়ে ঘনিষ্ঠ হত জ্যোতি। প্রতিবেশীরা তা জানতেও পারতেন। কিন্তু, তাঁরা এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
সোমবার রাতেই সাঁকরাইল থানার আড়গোড়ি শ্রীপল্লিতে প্রেমিক ও তার বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুন করে স্ত্রী। এই ঘটনায় মঙ্গলবারই পুলিস তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে। তারা খুনের কথা স্বীকার করেছে। এমনকী, বেশ কিছুদিন ধরেই যে তারককে খুন করা হবে তা স্ত্রী জ্যোতি ও তার প্রেমিক শম্ভু সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সনাতনকেও এই ঘটনায় পরে যুক্ত করা হয়। পুলিসের জেরার মুখে তারা স্বীকার করেছে, অন্যান্য দিনের মতো সোমবার রাতেও তারা তারকবাবুর বাড়িতে মদের আসর বসায়। সেখানে শম্ভু ও সনাতন ছিল। জ্যোতি মদের সঙ্গে খাওয়ার জন্য বাটা মাছ ভেজে দেয়। শম্ভুই সে বাটা মাছ এনেছিল। এরপর কিছুটা মদ খাওয়ার পরই শম্ভু অচেতন হয়ে পড়েন।
পুলিসের জেরার মুখে শম্ভু জানিয়েছে, মদের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে সে খুব সহজেই অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে তারককে খুন করা হয়। জ্যোতিও এই কাজে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছিল। এরপরই শম্ভু ও সনাতন পালিয়ে যায়। কিন্তু, রক্ত দেখে জ্যোতি মাথা ঠিক রাখতে পারেনি। সে চিৎকার করে ফেলে। তখন পাশেই থাকা তারকের বাড়ির লোক সেখানে পৌঁছায়। তারপরই তারককে তাঁরা উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ডাক্তারা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
কিন্তু, জ্যোতির সম্পর্কে তারকের আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা সব জানতেন। তাই এই ঘটনার পরই তাঁরা জ্যোতিকে চেপে ধরেন। জ্যোতি তাঁদের কাছে সব কিছু স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়। এরপরই তারকের পরিবারের লোকজন সাঁকরাইল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিস প্রথমে জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে সনাতনকে গ্রেপ্তার করে ও পরে শম্ভুকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। শম্ভুর কাছ থেকে পুলিস জানতে পেরেছে, জ্যোতির সঙ্গে সনাতনের সম্পর্ক অনেকদিনের। এছাড়া আরও ওই এলাকার কিছু যুবকের সঙ্গে জ্যোতির সম্পর্ক ছিল। তা নিয়ে শম্ভুর সঙ্গেও তার গোলমাল হয়েছে। কিন্তু, মাঝে জ্যোতিকে নিয়ে শম্ভু পালিয়ে যাওয়ার পর জ্যোতি তার কাছে কথা দিয়েছিল, আর কারও সঙ্গে সে সম্পর্ক রাখবে না। কিন্তু, তারক পরে জ্যোতিকে বুঝিয়ে বাড়ি নিয়ে আসে। তারপরও সে শম্ভুর সঙ্গে সম্পর্ক রাখে। এরই মাঝে জ্যোতি আরও কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ঘরে ঘনিষ্ঠ সময় কাটিয়েছে বলেও প্রতিবেশীরা পুলিসকে জানিয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, সব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। ধৃতদের জেরা করে আরও কিছু জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।