কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
এলাকার উন্নয়ন চোখে পড়ার মতোই। রাস্তাঘাট ঝাঁচকচকে। শহর ছাড়িয়ে গ্রামে ঢুকলেও দেখা মিলবে পিচের রাস্তা। আলো, জল নিয়েও অভিযোগ নেই। কিন্তু এই উন্নয়নও কিন্তু ঢাকা পড়ে যাচ্ছে এলাকায় নেতাদের দাদাগিরিতে। কেউ সেই ক্ষোভ চেপে রেখে দিচ্ছেন। কেউ তা প্রকাশ করছেন। যেমন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের রায়নগরে কথা হচ্ছিল ব্যবসায়ী রথীন্দ্রনাথ রায়ের সঙ্গে। এলাকায় উন্নয়নের কথা পাড়তেই তার তালিকা পেশ করলেন তিনি। বললেন, কাজ এখানে অনেক হয়েছে। তা নিয়ে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। তবে সমস্যা তো অন্য কিছুতে।
সেটা কী জিজ্ঞাসা করতেই কিছুটা আড়ালে নিয়ে গিয়েই বলেন, গতবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখানে কম হিংসা হয়নি। বিরোধীদের মনোনয়ন জমা না দিতে দেওয়া থেকে মারামারি—কী না হয়েছে। এসব কিন্তু মানুষ ভালো ভাবে নেয়নি। তাছাড়া আদি নেতারা নিষ্ক্রিয়। খোদ এলাকার বিধায়কই বসে রয়েছেন। তাঁকে কোনও অনুষ্ঠানে ডাকা হয় না। কিছু যুব নেতা নিজেদের হাতে ক্ষমতা পেয়ে যা নয় তা করছেন। চমকানো-ধমকানো থেকে তোলাবাজি—সবই করছে। আমরা এসবে বিরক্ত।
অন্যদিকে, রায়নগর ছাড়িয়ে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড কালীনগরের বাসিন্দা তরুণ কবিরাজ নামে এক ব্যক্তির কথায়, তৃণমূল এখানে ভালোই কাজ করেছে। সমস্যা দলের কিছু যুব নেতাকে নিয়ে। তাঁদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মানুষ। যা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। শহর ছাড়িয়ে গ্রামে প্রবেশ করা গেল। গুরুদাসনগরের ৭০ বছরের বৃদ্ধ মহম্মদ নাসিরুল্লার মতে, আমরা সবই পেয়েছি। সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে গ্রামের সবাই। তবে নেতারা যেভাবে এসে টাকা চাইছে, তাতে আমরা কী করব? আরেক গ্রামবাসী অশোক জানার কথায়, আমাদের ওসব নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ কী! নেতারা আসবেন। কিন্তু এ নিয়েই আমাদের চলতে হবে। ভোট দেওয়ার সময় আমরা তখন ভাবব।
ডায়মন্ডহারবার জুড়ে এখন লোকের মুখে মুখে শাসক দলের উন্নয়ন এবং অত্যাচারের কথা ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাজ্যের অন্যতম হাইপ্রোফাইল কেন্দ্র হিসেবেই পরিচিত কারণ এখনকার তৃণমূল প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এলাকা ঘুরলে তৃণমূলের দেওয়াল লিখন থেকে পোস্টার-হোর্ডিংয়ে বিরোধীদের পিছনে ফেলেছে তৃণমূল, সেটা স্বাভাবিক। বিজেপি কিংবা সিপিএম’ও এই আসন ছিনিয়ে নিতে ঝাঁপিয়েছে। এলাকাবাসীদের কাছে সিপিএমের চেয়েও গেরুয়া শিবির নিয়েই আগ্রহ বেশি। ট্রেন থেকে চোখে পড়ল, গুরদাসপুর, নেতরা সহ একাধিক জায়গায় বিজেপি’র পতাকায় ছেয়ে গিয়েছে। এই কেন্দ্রে বিজেপি পতাকা বা দেওয়াল লিখন যতই হোক না কেন, লোকের মুখে মুখে কিন্তু অন্য দলের চেয়ে বিজেপি নিয়েই চর্চা হয়। কাজের নিরিখে প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ, একই সঙ্গে নব্য তৃণমূলীদের অত্যাচারের কথাও ঘুরে ফিরে আসছে তাঁদের মুখে। তবে ক্ষোভের কথা কেউ কেউ বললেও, অনেকেই মুখে আঙুল দিয়ে বলছেন, ওসব বলা বারণ!