কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
এই ঘটনার পরই বিট অফিসার সহ বনকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওয়েষ্ট বেঙ্গল ফরেষ্ট সার্ভিস এমপ্লয়িজ ফেডারেশন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অমল সিনহা বলেন, চলতি বছরে ঝড়খালিতে নৌকাতে পর্যটকদের বেড়ানো বন্ধ করা নিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিট অফিসার সহ কর্মীরা। সেখানেও ডিএফওকে দীর্ঘ সময় ঘেরাও করে রাখা হয়। তারপর শনিবার মাঝরাতে বাঘ মারার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে গিয়ে ফের আক্রান্ত হলেন বন আধিকারিক থেকে বনকর্মীরা। তিনি বলেন, পর পর এই ঘটনা থেকে প্রমাণ হচ্ছে, বিট অফিসার থেকে বনকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও নজর নেই। এর প্রতিবাদে আজ, সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন রেঞ্জ অফিসের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হয়েছে। বনমন্ত্রী বিনয় বর্মণ বলেন, ঘটনাটি নজরে এসেছে। খুবই নিন্দনীয়। এ ব্যাপারে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মার্চ মাসে সুন্দরবনের কুলতলি রেঞ্জের আজমলমারি জঙ্গলে হরিণ পাতা ফাঁদে বাঘ আটকে গিয়ে মারা যায়। ওই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে বনদপ্তর ও পুলিস। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক থেকে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠি দেওয়া হয় বনদপ্তরকে। স্বাভাবিকভাবে ভয়ঙ্কর চাপের মধ্যে পড়ে যায় বনদপ্তর। এরপর চারপাশে অভিযানে নেমে কুলতলির মধ্যগুড়গুড়িয়া থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বনদপ্তর জানতে পারে, ওই তল্লাটের লোকজনই হরিণের জন্য আজমলমারি জঙ্গলে ফাঁদ পেতেছিল। মধ্যগুড়গুড়িয়া ও পূর্ব গুড়গুড়িয়ার এক বাসিন্দা জানান, বাঘ মারা যাওয়ার পর পুলিস ও বন বিভাগ থেকে বেশ কয়েকজনকে তুলে নিয়ে যায়। এরমধ্যে ওই ঘটনায় যুক্ত নয়, এমন কয়েকজনকেও ধরা হয়। এতেই গ্রামের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। তা আরও বেড়ে যায় শুক্রবার দেউলবাড়ি থেকে একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে ধরার জন্য। তা নিয়ে ঘটনার দিন পুলিস ও বনকর্মীদের সঙ্গে গ্রামের লোকজনের ধস্তাধস্তি থেকে হাতাহাতি হয়েছে। ওই ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে গ্রামের লোকজন। দু’দিন আগে পূর্ব গুড়গুড়িয়ার শ্যামল নামে একজনকে ধরে কুলতলি রেঞ্জ। তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাতে আরও তেতে ছিল ওই তল্লাটের লোকজন। এরপর শনিবার রাত ১টা নাগাদ ডিএফওর নেতৃত্বে ন’জনের একটি দল পূর্ব গুড়গুড়িয়ার মনসাতলা গ্রামে গিয়ে একজনকে ধরার পর পাশের বাড়িতে ঢোকে, সেই সময় শুরু হয় চিৎকার। চারপাশ থেকে মহিলাদের উলুধ্বনির শব্দ হতেই বন আধিকারিক, বিট অফিসার ও ফরেষ্ট গার্ডদের কয়েকশো মানুষ ঘিরে ফেলে। এরপর দা, কুড়ুল, বাঁশ, লাঠি ও লোহার রড নিয়ে শুরু হয় হামলা। রীতিমতো মাটিতে ফেলে মারা হয়। একজন বনকর্মী পালিয়ে গিয়ে থানায় ফোন করার পর পুলিস গিয়ে সকলকে উদ্ধার করে।
এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল ও এসইউসির মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি গোপাল মাঝি বলেন, হামলাকারীরা এসইউসির সক্রিয় সমর্থক। পরিকল্পিতভাবে গ্রামের লোকজন অভিযুক্তকে ধরিয়ে দেওয়ার নাম করে ডিএফওসহ বিট অফিসারদের ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে ঘেরাও করে হামলা চালায়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করছি। জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের এসইউসির প্রার্থী জয়কৃষ্ণ হালদার ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, বনবিভাগ ও পুলিস শাসকদলের কথায় চলছে। সেই কারণে বাঘ মারার ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের না ধরে নিরপরাধ ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শনিবার মাঝরাতে একজনের বাড়িতে ঢুকে এক মহিলাকে অসম্মানিত করা হয়েছে। তারপরই গ্রামের মানুষ খেপে যান। এরপর প্রতিরোধ করেন। কারও উপর হামলা হয়েছে বলে খবর নেই।