রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
বোর্ডিং পাশ করিয়ে ওই সুবেশা মহিলা সোজা চলে গেলেন সিকিউরিটি চেকিং এরিয়ায় মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট ঘরে। সেখানে তাঁকে তল্লাশি করেন সিআইএসএফের এক মহিলা জওয়ান। কথাবার্তায় তাঁকে মুগ্ধ করে ফেলেছিলেন ওই মহিলা। মেটাল ডিটেক্টরে শরীরে তল্লাশি চালানোর পর কোথাও কিছু মেলেনি। হঠাৎই সিআইএসএফের ওই জওয়ানের নজরে পড়ে মহিলার খোঁপা। তিনি তাঁকে অনুরোধ করেন, ম্যাডাম, খোঁপা খুলতে হবে। প্রথমে খুলতে চাননি ওই মহিলা। বিভিন্ন প্রসঙ্গের অবতারণা করতে থাকেন। কিন্তু নিজের কর্তব্যে অনড় ওই মহিলা জওয়ান জানান, খোঁপা না খুললে তিনি নিজেই খুলে দেবেন এবং পরীক্ষা করবেন। জওয়ানের চাপে পড়ে বিমান ধরতে আসা ওই মহিলা শেষমেশ খোঁপা খুলতে বাধ্য হন। তখনই পাওয়া যায় প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া কিছু ট্যাবলেট। সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হয় তাঁকে। খবর দেওয়া হয় নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোতে (এনসিবি)। অফিসাররা পরীক্ষার পর জানিয়ে দেন, এগুলি নিষিদ্ধ মাদক। এরপরই তাঁকে গ্রেপ্তার করে এনসিবি।
কিন্তু ওই মহিলা এইসব মাদক কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলেন? তাঁর পরিচয়ই বা কী? এই নিয়ে এনসিবির অফিসাররা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। জানা যায়, তিনি মুম্বইয়ের একজন পেশাদার মডেল। দু’-একটি ছবিতে অভিনয়ও করেছেন। তবে মডেলিং জগতেই তাঁর নামডাক বেশি। বাড়ি এ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনায়। কলকাতায় বিভিন্ন পার্টিতে তিনি নিয়মিত যোগ দেন। ওই সমস্ত পার্টিতে বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ মাদক ব্যবহার করা হয়। তিনি নিজেও মাদক সেবন করেন। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কলকাতায় এসেছিলেন একটি পার্টিতে যোগ দিতে। মূম্বইয়ের মডেলিং জগতের এক নামী তারকাও সেখানে এসেছিলেন। তাঁর মাধ্যমেই সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে হাজির ছিলেন কলকাতা ও মুম্বইয়ের মডেলিং ও বিনোদন জগতের একাধিক ব্যক্তিত্ব। সেখানে নিষিদ্ধ মাদক এমডিএমও নেওয়া চলছিল। এনসিবির কাছে ওই মডেলের দাবি, সেখান থেকে বেশকিছু এমডিএমএ তিনি সংগ্রহ করেন। যা নিয়ে হোটেলে চলে আসেন। পাঁচ তারিখ হোটেল থেকে বেরনোর সময় চুলের খোঁপায় সেগুলি ঢুকিয়ে নেন। যাতে কারও নজরে না পড়ে। এগুলি নিজের জন্যই নিয়েছিলেন বলে তিনি দাবি করেছেন।
যদিও তাঁর এই বক্তব্য বিশ্বাস করতে পারছেন না এনসিবির অফিসাররা। ওই মডেল মুম্বই থেকে নিষিদ্ধ মাদক নিয়ে এসে কলকাতার বিভিন্ন পার্টিতে সরবরাহ করছিলেন কি না, সেব্যাপারে খোঁজখবর করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে মাদকচক্রের যোগের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এর আগে এনসিবি পার্টিতে নিষিদ্ধ মাদক সরবরাহের অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। তখনই জানা যায়, কীভাবে পার্টি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মাদক কারবারিদের যোগাযোগ গড়ে উঠেছে। এমনকী নামী মডেল থেকে শুরু করে বিনোদন জগতের একাংশ কীভাবে এই মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। সেই কারণে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে, ধৃত ওই মডেলের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদক কারবারিদের কোনও যোগ রয়েছে কি না।