নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সাতসকালে অজ্ঞাতপরিচয় প্রৌঢ়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। সোমবার রিজেন্ট পার্ক এলাকার ক্ষেত্রমোহন নস্কর রোডের একটি চারতলা আবাসনে। আবাসনের বাসিন্দার কাছ থেকে পুলিস জানতে পেরেছে, সোমবার সকালে আবাসনের ছাদে উঠতে গিয়ে তাজ্জব হয়ে যান সেখানকার বাসিন্দারা। চারতলায় ওঠার সিঁড়ির রেলিং থেকে ঝুলছে খালি গায়ে, হাফ প্যান্ট পরা এক প্রৌঢ়ের দেহ। যিনি প্রথম দেহটি দেখতে পান, তিনি সঙ্গে সঙ্গে আবাসনের বাকি বাসিন্দাদের খবর দেন। খবর যায় রিজেন্ট পার্ক থানায়। পুলিস এসে আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে। তবে কেউই ওই প্রৌঢ়কে শনাক্ত করতে পারেননি। বাসিন্দাদের দাবি, মৃত প্রৌঢ় ওই আবাসনের বাসিন্দা নন। আর সেখান থেকেই দানা বাঁধছে রহস্য! এভাবে আবাসনের ভিতরে ঢুকে গেলেন কীভাবে ওই প্রৌঢ়? ওই আবাসনের গ্যারাজে পাঁচটি দামি গাড়ি থাকে। তাহলে সেই আবাসনের গেট কীভাবে অসুরক্ষিত হয়ে খোলা থাকতে পারে? রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিস জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। একজন প্রৌঢ় কেনই বা ওই আবাসনের ভিতরে ঢুকে আত্মহত্যা করতে যাবেন, সেটাই এখন রহস্যের বিষয়।
পুলিস জানিয়েছে, মৃতের সঙ্গে থাকা এমন কিছু পায়নি যা থেকে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়। ইতিমধ্যেই আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে এক দফা কথা বলা হয়েছে। ওই প্রৌঢ় কোনও ফ্ল্যাটে পরিচারকের কাজ করতেন, এমন তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিস জানিয়েছে, একটি পর্দার কাপড় দিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ওই প্রৌঢ় রেলিং থেকে ঝুলছিলেন। আবাসনের এক বাসিন্দা ওই পর্দার কাপড় শনাক্ত করেছেন। তিনি সেটি ছাদে শুকোতে দিয়েছিলেন।
তবে এদিন তদন্তের মধ্যেই পার্শ্ববর্তী একটি আবাসনের বাসিন্দা এক যুবক বলেন, তিনি রবিবার রাত একটা নাগাদ একজনকে দৌঁড়ে আসতে দেখেছিলেন। তাঁরও দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তখন তাঁকে পুলিস মৃতের ছবি দেখায়। তিনি তা দেখে বলেন, ওই প্রৌঢ়কেই তিনি রাতে দৌঁড়ে আসতে দেখেছিলেন। এরপরই রিজেন্ট পার্ক থানায় পুলিস তাঁর বয়ান নথিবদ্ধ করে।
এদিন ঘটনাস্থলে আসেন হোমিসাইডের গোয়েন্দারা এবং ফরেনসিকের আধিকারিকরা। তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। ফরেনসিকের আধিকারিকদের কথায়, রক্তের নমুনা সহ একাধিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা হবে। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের দেহে কয়েকটি জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার সঙ্গে মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। আপাতত পুলিস অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।