বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জামা-কাপড়ের ব্যবসায়ী আরামবাগের ইমতিয়াজ আলি রবিবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। ব্যবসার কাজেই তিনি বাইরে যাচ্ছেন বলে বাড়ির লোকজনকে জানিয়ে যান। রাত পর্যন্ত তিনি বাড়ি না ফেরায় তাঁরা ইমতিয়াজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। স্বভাবতই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তাঁর পরিজনরা। এর মাঝেই রাতে অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন আসে ইমতিয়াজের ভাইয়ের কাছে। সে জানায়, ইমতিয়াজ তাদের কব্জায় রয়েছে। তাঁকে ছাড়াতে হলে ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এই ফোনের পরেই আতঙ্ক গ্রাস করে পরিবারকে। আরামবাগ থানায় তাঁরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ জানানোর পরেও বেশ কয়েকবার ইমতিয়াজের ভাইকে ফোন করে অপহরণকারীরা। পুলিস বলে, আপনারা অপহরণকারীদের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যান। কোথা থেকে ফোনগুলি আসছে, তার টাওয়ার লোকেশন নিতে শুরু করে পুলিস। বেশ কয়েকদফা দর কষাকষির পর মুক্তিপণের অঙ্ক ১ লক্ষ ২০ হাজারে টাকা ঠেকে। ঠিক হয়, কলকাতায় এই টাকা হাতবদল করা হবে। তারপর ছাড়া হবে ইমতিয়াজকে। এরপরই হুগলি জেলা পুলিস যোগাযোগ করে কলকাতা পুলিসের সঙ্গে। রাতেই অপহৃতের ভাইকে নিয়ে আরামবাগ থানার পুলিস হেয়ার স্ট্রিট থানায় আসে। অপহৃতকে উদ্ধারের বিষয়ে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়। সেইমতো সাজানো হয় কৌশল। এরমধ্যেই অপহৃতের ভাই অপহরণকারীদের সঙ্গে কথা বলে লেনদেনের স্থান ঠিক করেন। পুলিসের পরামর্শমতো তাদের মেট্রো সিনেমার সামনে আসতে বলা হয়। নির্দিষ্ট সময়েই ইমতিয়াজের ভাই টাকা নিয়ে সেখানে পৌঁছে যান। তাঁর সঙ্গে সাদা পোশাকে সেখানে অপেক্ষা করছিল আরামবাগ ও হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিস। টাকা লেনদেনের সময় পুলিসের নজর ছিল অপহরণকারীর দিকে। সে টাকার ব্যাগ নিয়ে সেখান থেকে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত। কিন্তু পুলিস ধাওয়া করে ধরে ফেলে ওই যুবককে। যুবকের নাম রাজু। তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। অভিযুক্তকে জেরা করে জানা যায়, ইমতিয়াজকে জানবাজার এলাকার একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে হানা দিয়ে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। অপহৃতকে উদ্ধার করে তুলে দেওয়া হয় হুগলি জেলা পুলিসের হাতে।
ধৃত পুলিসকে জানিয়েছে, তারও জামা-কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে। ব্যবসায়িক লেনদেনের সূত্রে সে ইমতিয়াজের থেকে টাকা পেত। কিন্তু ওই টাকা সোজা পথে না পাওয়ায় সে ইমতিয়াজকে অপহরণের ছক কষে। ব্যবসা সংক্রান্ত আলোচনার টোপ দিয়ে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। এরপর অপহরণ করে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। আটকে রেখে টাকা আদায় করাই তার উদ্দেশ্য ছিল। তবে অপহরণকারীর সঙ্গে আর কারা ছিল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিস।