সুকান্ত বসু, কলকাতা: ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তেই শুরু হয়ে গেল বিভিন্ন দলীয় পতাকার বেচাকেনা। রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেওয়ায় ঘাসফুলের পতাকার বরাত আসতে শুরু করেছে বড়বাজারে। দোকানিদের আশা, আর ক’দিনের মধ্যেই পদ্মফুল, কাস্তে হাতুড়ি কিংবা হাত প্রতীকের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হয়ে যাবে। তারপরই পতাকা-ব্যানারের অর্ডার আছড়ে পড়বে বড়বাজারের দোকানগুলিতে। বৃহস্পতিবার বড়বাজারের ব্যবসায়ীদের কথাতেই এই আশার কথা শোনা গেল। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, আর ক’দিন বাদেই দোল-হোলি। তাই এখন বড়বাজার জুড়ে সর্বত্র বিকোচ্ছে রং, পিচকারি, হরেক আবির। ওল্ড চীনা বাজার স্ট্রিটের বিভিন্ন দোকানে ঢুঁ মারতেই দেখা গেল, সেখানে ঢেলে বিক্রি হচ্ছে দোল-হোলিতে রাঙিয়ে দেওয়ার উপকরণ। তারই মধ্যে কয়েকটি দোকান ইতিমধ্যেই পতাকার পসরা নিয়ে বসে গিয়েছে। দোকানের সামনেই স্তূপাকৃত হয়ে পড়ে রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা। আবার কিছু কিছু দোকানদার রাজনৈতিক দলের কর্মীদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন দলের পতাকা টাঙিয়ে সাজিয়ে তুলেছেন দোকান। দোকানে ঢুকতেই দেখা গেল, সেখানে মজুত করা রয়েছে বিভিন্ন প্রতীকে রাঙানো পতাকা। ব্যবসায়ীদের কথায়, আমরা সব দলের পতাকা তৈরির বরাত নিয়ে থাকি। আশা করছি, এবারও সেই বরাত পাব। ভোট যত এগিয়ে আসবে, ততই বিক্রি বাড়বে পতাকার। তখন আর নাওয়া খাওয়ার সময় পাওয়া যাবে না। কয়েকজন ব্যবসায়ী হাসতে হাসতে বললেন, আমরা সিজনাল ব্যবসা করি। এখন দোকান রং-এ ঠাসা। হোলি মিটলেই দেখবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকায় ভরে উঠেছে দোকান। শুধু পতাকা নয়, ব্যানার, ফেস্টুন, ব্যাজ সবই মিলবে এখানে।
তাঁরা বললেন, প্রতিবারই ভোটের সময় দেখা যায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা এখানে এসে দলের প্রতীক আঁকা পতাকা কিনে নিয়ে যায়। তাই আমরা যা বরাত পাই, তার থেকে বেশি পরিমাণ পতাকা তৈরি করে রাখি। কোথায় তৈরি হয় এই সব রাজনৈতিক দলের পতাকা? উত্তরে তাঁরা জানান, কলকাতা ও শহরতলি ছাড়াও ভিনরাজ্যের কারখানায় আমরা পতাকা তৈরির বরাত দিয়ে থাকি। পরে লরি বোঝাই করে তা আসে কলকাতার বাজারে। এদিন ক্যানিং স্ট্রিট, কালাকার স্ট্রিট, ওল্ড চীনা বাজার স্ট্রিটের কয়েকজন ব্যবসায়ী কথা প্রসঙ্গে বললেন, গত রবিবার নির্বাচন কমিশন ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করা মাত্রই দু’-একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীরা এখানে এসে পতাকার দরদাম করে গিয়েছেন। তাঁদের আশা, সমস্ত দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হলেই গতি পাবে পতাকার বেচাকেনা। এদিন বড়বাজারের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, দলীয় পতাকা ছাড়াও বিভিন্ন দলের প্রতীক লাগানো ছাতা ঝুলছে। আগামীদিনে সেই ছাতার বরাতও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন দোকানিরা।