পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
স্টুডেন্টস কাউন্সিলের বিষয়টি তাঁরা মানবেন না। ফিরিয়ে আনতে হবে ইউনিয়ন। এই দাবিতে গত বছর থেকেই নানা সময় আন্দোলন করে এসেছেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। ঘেরাও, মিছিল, অবস্থান— সবই করেছেন তাঁরা। এদিন সেই আন্দোলনই ফের ফিরে এল। পড়ুয়াদের দাবি মেনে এদিন বিশেষ ইসি ডাকা হয়েছিল। সেখানে শুধুমাত্র ছাত্র কাউন্সিলের বিষয়টিই আলোচনা করা হয়। বৈঠক চলাকালীনই তিন ফ্যাকাল্টির পড়ুয়ারা মিছিল করেন। স্লোগান দিতে দিতে অরবিন্দ ভবনের গাড়ি বারান্দায় এসে জমায়েত করেন তাঁরা। তবে তাঁর আগে থেকেই ভবনের ভিতরে তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু এবং টিএমসিপি’র পড়ুয়ারা নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে অবস্থান করছিলেন।
বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলার পর উপাচার্য, রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এবং সহ উপাচার্য প্রদীপ ঘোষ বেরিয়ে যান। এক নম্বরে রাখা উপাচার্যের গাড়ির দিকে সবাই এগতে থাকলে, আন্দোলনরত পড়ুয়ারা ছুটে এসে গাড়ি ঘিরে ধরেন। ততক্ষণে সবাই গাড়িতে উঠে পড়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে কথা না বলে উপাচার্য বেরতে পারবেন না বলে ফের বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ছাত্রছাত্রীরা। সুরঞ্জনবাবু তাঁদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসি’র কিছু করণীয় নেই। যা করার রাজ্য সরকার করতে পারবে। কিন্তু তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। উল্টে উপাচার্য তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে জোর স্লোগান দেওয়া শুরু হয়। এরই মধ্যেই গাড়ির এক ধারে ঘিরে দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূলের শিক্ষাকর্মী এবং টিএমসিপি’র সদস্যরা। গাড়ি আটকে রাখা অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের পড়ুয়াদের সরাতে শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের নেতারা নেমে পড়েন। তারপরই দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। একে অপরকে কিল, চড়, ঘুসি মারতে থাকেন তাঁরা। এই ঘটনায় দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আগেই গাড়ি থেকে নেমে পড়েন উপাচার্য ও বাকি কর্তারা। কিন্তু ওই তুমুল বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে নিরাপত্তারক্ষীরাও কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। উপাচার্য পরে অভিযোগ করেন, তাঁকে শারীরিকবাবে নিগ্রহ করা হয়েছে। ওই অবস্থায় ফের প্রশাসনিক ভবনে ঢুকে পড়েন তিনি।
এদিকে, পড়ুয়াদের তরফে জানানো হয়, যতক্ষণ না দাবি মানা হচ্ছে, ততক্ষণ এভাবেই বিক্ষোভ-অবস্থান চলবে। সরকারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কী কথা হয়েছে, তা জানাতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কেই পড়ুয়াদের দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরতে হবে। এই ঘটনার জেরে অসুস্থ বোধ করতে থাকেন সুরঞ্জনবাবু। পরে তাঁকে স্ট্রেচারে করে বের করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পড়ুয়াদের আন্দোলনের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, এটী কী ধরনের আচরণ? যে কোনও আলোচনারই একটা পদ্ধতি আছে। আমি অসুস্থ বোধ করছি। ইউনিয়নের দাবির প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, দাবি যে কেউ করতে পারেন। যাঁরা দাবি করছেন, তাঁদের বোঝালে বুঝতে পারতেন।
এদিকে, হাতাহাতির ঘটনায় আর্টস, সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে তাঁদের মারধর করার অভিযোগ এনেছে টিএমসিপি। যদিও তাদের এই দাবি উড়িয়ে বাকি সংগঠনগুলি জানিয়েছে, টিএমসিপি’ই প্রথম গায়ে হাত দিয়েছে। তাদের উস্কানিতেই এমনটা হয়েছে।