বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
চন্দননগরের বাসিন্দা তথা কনভেনশনের অন্যতম উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি দেওয়ার পর সম্প্রতি ওনার দপ্তর থেকে আমাদের কাছে একটি উত্তর এসেছে। ওই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে যে, বিষয়টি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। কিন্তু, স্বাস্থ্য মন্ত্রক ছাড়া এই বিষয়টি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব কতটা খতিয়ে দেখতে পারবেন, তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে। তাই আমরা ফের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি দেওয়ার পরিকল্পনা করছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬৫ সালে চন্দননগরের বাসিন্দা শিবশঙ্কর নন্দী তাঁর বাবা রূপলাল নন্দীর স্মরণে এক বিঘার বেশি জমি দান করেন। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুশীলা নায়ার কলকাতার বাইরে চন্দননগরে প্রথম ২০ শষ্যার এই ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রথম কয়েক বছর ভালোই চিকিৎসা চলত। রোগীদের ভর্তি নেওয়ার সঙ্গে কেমোথেরাপি হত। দেওয়া হত প্রয়োজনীয় ওষুধও। কিন্তু, চিকিৎসকের অভাবে রোগী ভরতি ক্রমশ কমতে শুরু করে। তারপরেও কয়েক বছর শুধু আউটডোর চলছিল। আস্তে আস্তে হাসপাতাল ধুঁকতে থাকে। কিন্তু, সেটাও প্রায় দশ বছর ধরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
বর্তমানে ওই হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্স মিলিয়ে সাতটি পদই ফাঁকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পুনরায় চালু করার জন্য একাধিকবার কলকাতার চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারকে জানানো হয়েছে। কিন্তু, তাদের কোন হেলদোল নেই। যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা, সেই কারণে রাজ্য সরকার চন্দননগরের ক্যান্সার হাসপাতাল নিয়ে কিছু করতে পারছে না। ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসায় গঙ্গার পশ্চিমপাড়ে থাকা এই হাসপাতালটি চালু থাকলে বহু মানুষের সুবিধা হত। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি এই হাসপাতাল গত ১০ বছর যাবৎ বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
বছরখানেক আগে এই হাসপাতালের দেওয়ালে লাল-হলুদ রঙের পোচ পড়েছে। কিন্তু, চিকিৎসক বা নার্স না থাকায় হাসপাতালের তালা খোলেনি। তাই চিকিৎসক, শিক্ষাবিদ, সাধারণ মানুষ সবাইকে নিয়ে হাসপাতালটি পুনরায় খোলার দাবিতে কনভেনশনের মাধ্যমে ১৮ জনের একটি কমিটি গড়া হয়েছে। পাশাপাশি এই কেন্দ্রটি নতুন করে সাজিয়ে গুছিয়ে চালু করার জন্য ওই কমিটি চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারের প্রধানকে চিঠি দেয়। কিন্তু, তার উত্তরে তিনি কমিটির সদস্যদের জানান, চন্দননগরের ক্যান্সার হাসপাতাল কবে খুলবে আমার জানা নেই। তারপরেই কমিটির সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে চিঠি দেন। কমিটির আরেক সদস্য চিকিৎসক প্রবুদ্ধ ঘোষ বলেন, ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় জরুরি। আগে রোগ নির্ণয় করতে পারলে অনেক ক্ষেত্রে রোগী বেঁচে যান। এই হাসপাতাল চালু থাকলে মানুষ সহজেই রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা করাতে পারতেন। এখানে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তরা সহজেই চিকিৎসা পেতেন। ক্যান্সার রোগের খরচ তখন মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে ছিল। আমরা চাই হাসপাতাল মানুষের স্বার্থেই খোলা হোক।