গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এর আগে বইমেলায় স্টল নিয়ে টানাপোড়েন, আগুন, ধূলো, এমনকী বই চুরির অভিযোগে নাজেহাল হতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। এসব দিক থেকে এবারের মেলা অনেকটাই স্বস্তিতে রেখেছিল গিল্ডকর্তাদের। বিষয়টি গোপন করেননি তাঁরাও। শুধাংশুবাবু বলেন, আগের মেলাগুলিতে বিভিন্নরকম ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন ক্রেতা থেকে শুরু করে উদ্যোক্তারা। এবারের বইমেলা সেই দিক থেকে ‘ঝঞ্ঝাটহীন’। বই চুরি নিয়েও তেমন অভিযোগ আসেনি। মেলা শুরুর প্রথম দিকে অটোর ভাড়া নিয়ে একটা অভিযোগ উঠছিল। বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছিল দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর সঙ্গে। পরে আর সেই সমস্যায় পড়তে হয়নি মেলায় আসা সাধারণ মানুষকে। গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, মাঝে আবহাওয়া কিছুটা আশঙ্কার মেঘ তৈরি করেছিল বটে। কিন্তু, সেই মেঘ তেমন জমাট বাঁধেনি। শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত ক্রেতারা ভিড় করেছিলেন সেন্ট্রাল পার্কের মেলা প্রাঙ্গনে। মেলা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে সহায়তার জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রশংসা করেছেন গিল্ডকর্তারা।
মেলায় ভিড় নিয়ে সুধাংশুবাবু বলেন, এবারের মেলা গত বছরের তুলনায় একদিন কম হয়েছে। তাতেও ভিড়ের বহর কমেনি। গত বছর ২২ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন মেলায়। ২০ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। এবারে গত শনিবার দুপুর পর্যন্ত ১৬ লক্ষ মানুষ মেলায় এসেছিলেন। সেই সময় পর্যন্ত ১৫ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। মেলা শেষের পর দেখা যাচ্ছে, এবারের মেলায় ২৩ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন। মোট ২১ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। গিল্ড সূত্রের খবর, এবারের মেলায় দেবব্রত চট্টোপাধ্যায় নামে নদীয়ার চাকদহের বাসিন্দা এক শিক্ষক একাই ২ লক্ষ ৭২ হাজার টাকার বই কিনেছেন। যদিও বেশি টাকার বই কেনার কোনও পুরস্কার দেওয়ার কথা না থাকলেও, তাঁকে শেষ দিনে সম্মান জানানো হয়। তিনি বলেন, বাড়িতে ১২ থেকে ১৪ হাজার বই ছিলই। এবারের কেনা বইগুলি এবার গুছিয়ে তুলতে হবে। গিল্ডের এক কর্তা বলেন, বইপ্রেমীদের উৎসাহ দিতে আগামী বছরে এমন কোনও পুরস্কার দেওয়া যায় কি না, তা এবার ভেবে দেখার সময় এসেছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
এদিন সন্ধ্যায় কথা হচ্ছিল শহরতলির কয়েকজন পড়ুয়ার সঙ্গে। কলেজ ছুটি থাকায় বইমেলার মাঠে একজোট হয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, কলকাতা বইমেলা কোন মাঠে হচ্ছে, সেটা বিষয় নয়। যেখানেই মেলা হোক না কেন, বইপ্রেমীরা যাবেনই। এবারের মেলার জন্যও শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু বাস চলাচল করেছে। ফলে সমস্যা হয়নি। কথা হচ্ছিল রাজ্য সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী তপন পালের সঙ্গে। তিনি বলেন, এদিন নিয়ে তিন দিন মেলায় এলাম। আজও কিছু বই কিনেছি। মনটা খারাপ করে দিয়ে মেলাটা যেন হঠাৎই শেষ হয়ে গেল!