পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ১৯৯৫ সালে কলকাতার মেয়ে পুষ্পার বিয়ে হয় রানিগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক দিক থেকে প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান মনোজ ভালোটিয়ার সঙ্গে। মৃতের ভাই গোপাল আগরওয়ালের অভিযোগ, বোন পারিবারিক অশান্তির কথা বেশ কয়েকবারই জানিয়েছিল। কিন্তু, আলোচনার মাধ্যমে তা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু, ভাবা যায়নি, মাত্র ৩৯ বছর বয়সে সে চলে যাবে। অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর দুই সন্তানের মা পুষ্পাকে আংশিক অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হচ্ছিল। কিন্তু, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়, মৃতের কপালের ডান দিকে বুলেটের ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। বুলেটটি মাথার ভিতরেই রয়েছে। সেই সূত্রে মৃতের পরিবার হত্যার মামলা রুজু করতে চাইলেও প্রথমে তা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। পরে মৃতের স্বামীকে মূল অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের হলেও পুলিস রাজনৈতিক প্রভাবের জেরে তদন্তে গাফিলতি করছে বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর মামলার তদন্তভার রাজ্য পুলিসেরই গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি’র হাতে যায়। মৃতের পরিবার পরে হাইকোর্টে সিবিআই তদন্ত দাবি করে জানায়, সিআইডি দায়সারা তদন্ত করছে। অন্যদিকে, এই ঘটনার জেরে সংশ্লিষ্ট এলাকায় রীতিমতো সামাজিক আন্দোলন তৈরি হয়। ওই আন্দোলন থেকেও সিবিআই তদন্তের দাবি উঠেছিল।
মৃতের ভাইয়ের তরফে আইনজীবী পার্থসারথি সেনগুপ্ত ও সোমপ্রিয় চৌধুরী আদালতকে জানিয়েছিলেন, মাথার ডানদিকে বুলেটের ক্ষতচিহ্ন ছিল। কিন্তু, মৃতের দুই হাত ও দুই পা ছিল ভীষণভাবে অগ্নিদগ্ধ। যদি কেউ আগুনে পুড়ে যান, তাঁর পক্ষে সেই হাতে রিভলভার নিয়ে নিজের কপালে গুলি করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে, যদি তিনি রিভলবার চালিয়ে নিজের কপালে গুলি করে থাকেন, তাহলে তখনই তাঁর মৃত্যু হওয়া স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে তিনি কীভাবে অগ্নিদগ্ধ হলেন? এই সাধারণ প্রশ্নের উত্তর পুলিস দিচ্ছে না। এমনকী মূল অভিযুক্ত সহ অন্যরা পলাতক বলে পুলিস দাবি করলেও অভিযুক্তরা বলছেন, তাঁরা কখনও পালিয়ে যাননি। এর একটাই অর্থ হয়, হয় পুলিস, নয়তো অভিযুক্ত পক্ষ মিথ্যা বলছে। পাশাপাশি যে গুলি মৃতের মাথায় মিলেছে, তার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এফএসএল এবং ব্যালেস্টিক রিপোর্ট পুলিস এখনও দিতে পারছে না। এই অবস্থায় আদালত গত বছরের ২১ আগস্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়।
কিন্তু, অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে ২৭ আগস্ট সিআইডি’র অতিরিক্ত ডিজিপি সিবিআই তদন্তের সেই নির্দেশ হাইকোর্টেই চ্যালেঞ্জ করেন। ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, সিবিআই নয়, সিআইডি এই ঘটনার তদন্ত করবে। কিন্তু, আবারও সিআইডি’র তদন্ত এবং চার্জশিট নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন ওঠে হাইকোর্টে। আর সেই সূত্রেই এদিন ওই নির্দেশ জারি হয়েছে। রাজ্যের তরফে নির্দেশটির উপর স্থগিতাদেশ প্রার্থনা করা হলেও আদালত তাতে সাড়া দেয়নি।