কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
মিছিল-মিটিং-সমাবেশ করে রাজনৈতিক দল। আর সেজন্য বুকভরা উদ্বেগ নিয়ে থাকে সাধারণ মানুষ। এ নতুন নয়। সেকথা ভালোই জানেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাই রোগজ্বালা নিয়ে বেরনো মানুষের ভোগান্তি যাতে কম হয়, সেজন্য সরকারি হাসপাতালের তৃণমূলপন্থী ডাক্তারদের সিএল নিয়েই সমাবেশ নয়তো ক্যাম্পে যেতে বলেছিল দল এবং দলীয় চিকিৎসক সংগঠন প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (পিডিএ)।
মঙ্গল থেকে শনিবার পর্যন্ত সুদূর উত্তরের চা বাগান থেকে দক্ষিণের জঙ্গলমহল, পাহাড় থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ শহরে এসেছেন। তাই বুধবার থেকেই কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় একের পর এক মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করে পিডিএ। ১৯শে অর্থাৎ ব্রিগেডের দিন পর্যন্ত সেখানেও যা লোক হল, তা গত কয়েক বছরে তৃণমূলের সমস্ত সমাবেশের রেকর্ড ছাপাল। এমনটাই দাবি করছেন দলের চিকিৎসক নেতারা।
পিডিএ’র হিসেব বলছে, বুধবার থেকে শনিবার বিকেলে ব্রিগেড ভাঙা পর্যন্ত মাথা ঘোরা, পেট ব্যথা, চোট আঘাত সহ নানা কারণে ১২ হাজারের বেশি তৃণমূল কর্মী ডাক্তার দেখিয়ে গিয়েছেন এইসব ক্যাম্পে। অ্যালোপ্যাথিক ও আয়ূশ শাখা মিলিয়ে ১৬৫৩ জন ডাক্তার ছিলেন তিনটে রোস্টারের ডিউটিতে। ফার্মাসিস্ট এবং নার্স মিলিয়ে ছিলেন আরও ১৬০০ জন।
এদিন ব্রিগেডের চারপাশে যে কোনও জরুরি পরিস্থিতি সামলাতে চারদিক ঘিরে ছিল ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স। তিনদিন মিলিয়ে বিভিন্ন মেডিক্যাল ক্যাম্পে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষের ভিড় সামলাতে ছিল আরও ২০টি অ্যাম্বুলেন্স। পিডিএ নেতা ডাঃ জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন, অক্সিজেন, ইসিজি সহ সমস্ত ধরনের ব্যবস্থা ছিল ক্যাম্পগুলিতে। পিডিএ নেতা ডাঃ নির্মল মাজি বলেন, সমাবেশস্থলের কাছেই এক কর্মীর হঠাৎ খিঁচুনি হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে সামাল দেওয়ায় তিনি অনেকটাই সুস্থ হয়ে যান। ভালো কাজ করেছেন মেডিক্যাল ক্যাম্পের ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী সকলেই।
সেন্ট্রাল পার্ক, শিয়ালদহ, হাওড়া স্টেশন, কলকাতা স্টেশন, ময়দান, হাতিবাগান সহ ২০টি মেডিক্যাল ক্যাম্পে দুশো রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসাও দেওয়া হয়। ২৫০ জনকে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
ব্রিগেডের দিন কেমন অবস্থা ছিল সরকারি হাসপাতালের? তখন দুপুর দুটো। এনআরএসে হাসপাতালের গা ঘেঁষে এপিসি রোডের দু’দিকে সার দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের বাস দাঁড়ানো। রাস্তা দিয়ে কাতারে কাতারে মানুষ হাঁটছেন। হাসপাতালের মেন গেটের সামনে এলেই সেই মানুষজনের একটা অংশ গোত্তা মেরে এনআরএস-এ ঢুকে পড়ছেন। ‘রথ দেখা কলা বেচা’-র মতো ব্রিগেড আর কলকাতায় ডাক্তার দেখানো দুটোই যদি হয়ে যায়! তাই বোধহয় অন্যান্য শনিবারের তুলনায় আউটডোরে রোগী একটু কম হলেও খুব একটা খারাপ ছিল না। অনেকেই বলছেন, এও আসলে ব্রিগেডেরই ভিড়!