নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রিহ্যাব সেন্টারে স্বামীকে কুকুরের সঙ্গে দেখে হতবাক স্ত্রী। রিহ্যাব কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই ব্যক্তি মাদকাসক্ত। সেই আসক্তি ছাড়াতেই কুকুর দিয়ে ভয় দেখিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। এরকম চিকিৎসা পদ্ধতির ঘটনা শুনে হতবাক স্ত্রী। স্বামীকে ফিরে পেতে চেয়ে শেষ পর্যন্ত লেকটাউন থানার দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। ঘটনাচক্রে কলকাতার একটি বড় শাড়ি বিপণী সংস্থার বাড়ির মেয়ে ওই মহিলা। তাঁর আইনজীবী নয়না মিত্র জানিয়েছেন, ছেলের পড়াশোনার সুবিধার জন্য ওই মহিলা নিউ আলিপুরে বাপের বাড়িতে থাকেন। সপ্তাহান্তে শ্বশুরবাড়ি যান। সম্প্রতি স্বামী-স্ত্রী অন্যান্য আত্মীয়দের সঙ্গে গাড়ি নিয়ে দার্জিলিংও ঘুরে এসেছিলেন। কিন্তু ফিরে আসার পর কয়েকদিন স্বামীর কোনও খোঁজ না পেয়ে মহিলা শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শ্বশুরবাড়ি থেকে অবশ্য তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। এরপরেই বিভিন্ন সূত্র থেকে স্ত্রী জানতে পারেন, তাঁর স্বামীকে একটি রিহ্যাব সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে চান স্ত্রী। কিন্তু, রিহ্যাব কর্তৃপক্ষ তাঁকে দেখা করতে দেয়নি। জানানো হয়, ওই ব্যক্তির মা-বাবা ছাড়া কারও সঙ্গেই দেখা করার অনুমতি দেওয়া হবে না। এরপরে অনেক জোরাজুরি করায় রিহ্যাব কর্তৃপক্ষ একটি সিসিটিভি ফুটেজ স্ত্রীকে দেখায়। তা দেখেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় ওই মহিলার। তাঁর আইনজীবীর দাবি, মক্কেল দেখেন একটি ঘরে তিনজন লোক রয়েছে। যার মধ্যে একজন তাঁর স্বামী। সেই ঘরে একটি কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে।
এই দেখে মহিলা রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রিহ্যাব কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান কেন তাঁর স্বামীকে কুকুরের সঙ্গে রাখা হয়েছে? আইনজীবীর দাবি, রিহ্যাব কর্তৃপক্ষ তখন তাঁর মক্কেলকে জানায়, এটাই তাঁদের চিকিৎসা পদ্ধতি। এরপরে ওই মহিলা আইনজীবীকে নিয়ে লেকটাউন থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। আইনজীবী নয়না মিত্র জানিয়েছেন, পুলিসের কাছে তাঁরা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু পুলিস যদি কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন। কিন্তু, ওই ব্যক্তিকে আচমকা কেন রিহ্যাবে ভর্তি করা হল? সেবিষয়ে তাঁর স্ত্রীর আইনজীবী জানিয়েছেন, পারিবারিক বিবাদের কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে তাঁদের অনুমান। তবে রিহ্যাব কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ওই ব্যক্তি মাদকাসক্ত এবং বাড়ির লোকেদের মারধর করেন। যদিও এটা কোনওভাবেই বাস্তব নয় বলে দাবি তাঁর স্ত্রীর। এদিকে, এবিষয়ে রি-হ্যাব কর্তৃপক্ষ সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু বলতে রাজি হয়নি।